জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের বলেছেন, ‘আমরা লোভ-লালসা থেকে দূরে থাকতে পারি না। যারা আমাদের দলে থেকে অন্য দলের রাজনীতি করে তাদের দল থেকে বের করে দিতে পারি না, আমরা ঝুঁকি নিতে পারি না। সামনের দিনে যদি রাজনীতিকে বাঁচাতে হয়, তবে ঝুঁকি নিতে হবে।’
নিজের জন্মদিন উপলক্ষে শনিবার রাজধানীর বনানীতে দলীয় কার্যালয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
জি এম কাদের বলেন, ‘আমাদের লাঙ্গল নিয়ে যাওয়া হবে, এ ধরনের হুমকি দেওয়া হয়। দল বাঁচাব, না রাজনীতি বাঁচাব। এই কারণে জাতীয় পার্টি সব সময় ভঙ্গুর হয়ে থাকে। সরকার আমাদের দুর্বল করার জন্য সবসময় একটা জোট বানিয়ে রাখে। যখন সত্যিকারের অর্থে আমরা রাজনীতি করব; জনগণের রাজনীতি করব তখন তারা বাধা দিয়ে আমাদের দলকে ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করবে। এ থেকে বাঁচতে হলে নেতা-কর্মীদের সত্যিকারের জাতীয় পার্টি করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘যারা জাতীয় পার্টির প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে অন্য দলে যেতে চায় তাদের দল থেকে বের করে দিতে হবে। এটা যদি করতে পারেন তাহলে দল টিকবে। না হলে টিকবে না। এভাবে গৃহপালিত দলের কোনো প্রয়োজনীয়তা দেশ ও জাতির কাছে নেই।’
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে জি এম কাদের আরও বলেন, ‘দলকে যদি বাঁচাতে হয়, তাহলে গৃহপালিত থেকে বেরিয়ে আসেন। দরকার হলে পরজীবী থাকব। পরজীবী থেকে আমরা স্বনির্ভর হব। আমাদের সেদিকে এগিয়ে যেতে হবে। যারা গৃহপালিত হওয়ার জন্য দায়ী, তাদের বর্জন করতে হবে।’
এদিকে কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে আয়োজিত বর্ধিত সভায় দলটির আরেক অংশের চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাপার ভরাডুবি না হলে সবকিছু মেনে নিতেন।
তিনি বলেন, ‘অনেকে প্রশ্ন করেন, কেন আমি নির্বাচনে অংশ নিলাম না। জাতীয় পার্টির অনেক নিবেদিতপ্রাণ নেতা, যাদের ভোটে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা ছিল- এমন প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। তাদের বাদ দিয়ে তো আমি নির্বাচন করতে পারি না। আমার ছেলের আসনও যদি কেড়ে নেওয়া হয়, তাহলে ছেলেকে ফেলে রেখে নির্বাচনে যেতে পারি না।’
রওশান এরশাদ বলেন, ‘তারপরও আমি সব কিছু মেনে নিতে পারতাম, যদি নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ভরাডুবি না হতো। জাতীয় পার্টিকে ধ্বংসের শেষ সীমানায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এটা আমি কীভাবে মেনে নেব?’
জাপাকে উদ্ধারের জন্য উদ্যোগ নেওয়ায় তার পক্ষের নেতাদের ধন্যবাদ জানিয়ে রওশন বলেন, ‘পার্টির অগণিত নেতা-কর্মীর একান্ত দাবির মুখে আমি জাতীয় পার্টির চেয়াম্যানের দায়িত্ব নিতে বাধ্য হয়েছি। আজ আপনারা আমার দায়িত্বগ্রহণকে অনুমোদন দিয়েছেন। আপনারাই জাতীয় পার্টির সব ক্ষমতার উৎস। আপনারা যেভাবে চাইবেন, পার্টি সেভাবেই পরিচালিত হবে।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাপার রওশনপন্থি অংশের মহাসচিব কাজী মামুনুর রশীদ, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক সফিকুল ইসলাম সেন্টু প্রমুখ।