সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিাম্ম হওয়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ এবং এর ২৩ নাবিক মুক্তি পেয়েছে তবে এর জন্য জলদস্যুদের ৫০ লাখ মার্কিন ডলার মুক্তিপণ দিতে হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৫৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। দুই দস্যুর বরাতে রোববার এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
আবদিরাশিদ ইউসুফ নামে এক জলদস্যু বলেছেন, দুই রাত আগে টাকাগুলো আমাদের কাছে আনা হয়… সেগুলো জাল কি না তা আমরা পরীক্ষা করে দেখি। এরপর আমরা টাকাগুলো দলের মধ্যে ভাগ করে সরকারি বাহিনীকে এড়িয়ে চলে যাই। ওই দস্যু আরও জানান, সব নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজটিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম পান্টল্যান্ড পোস্ট বলেছে, ২০১২ সালের পর এই প্রথম মুক্তিপণ পেলো সোমালি জলদস্যুরা। তবে এ তথ্য স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
অন্যদিকে, স্থানীয় আরেকটি সংবাদমাধ্যম গারো অনলাইন জানিয়েছে, উত্তর-পূর্ব সোমালিয়ার পান্টল্যান্ড রাজ্যের পূর্ব উপকূল থেকে অন্তত আট জলদস্যুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ছিনতাই হওয়া বাংলাদেশি জাহাজ ছেড়ে দেওয়ার কিছুক্ষণ পরেই তাদের গ্রেফতার করা হয়।
পান্টল্যান্ড পুলিশ ফোর্সের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা গারো অনলাইনকে জানিয়েছেন, তারা বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে আটকে রাখা জলদস্যু দলের আট সদস্যকে গ্রেফতার করেছেন।
গত মার্চে মোজাম্বিক থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাত যাওয়ার পথে ছিনতাইয়ের শিকার হয় বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ। জিম্মি করা হয় এর ২৩ নাবিককেও।
সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসু থেকে প্রায় ৬০০ নটিক্যাল মাইল পূর্বে ঘটে এই ছিনতাইয়ের ঘটনা। এরপর ভারত এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের যুদ্ধজাহাজ বাংলাদেশি জাহাজটির পিছু নিলেও সেটি দস্যুদের কবল থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
এমভি আবদুল্লাহর ক্রুরা দেশে ফিরছেন কবে
সোমালি জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্ত হওয়া জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ আগামী ১৯ এপ্রিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই পৌঁছাতে পারে। এর পরের দিন ২০ এপ্রিল জাহাজটির মুক্ত ক্রুরা বিমানে করে ফিরতে পারেন বাংলাদেশে।
চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে রোববার এমভি আবদুল্লাহর মালিক প্রতিষ্ঠান কেএসআরএমের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) শাহরিয়ার জাহান রাহাত বলেন, ‘জিম্মি নাবিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়েছে। ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ উদ্ধারে অভিযান চালানোর পরিকল্পনাকেও নিরুৎসাহিত করা হয়।’