শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ০৪:৪৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
সংবাদ শিরোনাম :
দীর্ঘদিনের জমি বিরোধের অবসান; সাংবাদিক এম ইদ্রিস আলীর উদ্যোগে সমাধান সবুজে ঘেরা মৌলভীবাজার জেলাকে আরও সবুজময় করতে চাই-জেলা প্রশাসক কমলগঞ্জে বিদেশী সিগারেটসহ গ্রেফতার-২ ট্যুরিস্ট কমিউনিটি পুলিশিং সভা অনুষ্ঠিত ভারী বৃষ্টি ও ভূমিধসের আশঙ্কা আবহাওয়া অধিদপ্তরের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফোরাম যুক্তরাজ্য কমলগঞ্জ উপজেলা শাখার ৩১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন ভুলে অন্য রেলস্টেশনে নেমে ‘ধর্ষণের শিকার’ কিশোরী, যুবক গ্রেপ্তার খুলনায় টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জনজীবন জুলাই যোদ্ধাদের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ২৫ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল সারাদেশে পাথর কোয়ারি চলবে আর সিলেটে চলবে না, এটা হবে না : বিভাগীয় কমিশনার

ঈদের ছুটিতে ভিড় জমেছে কমলগঞ্জের পর্যটন কেন্দ্রে

সালাহউদ্দিন শুভ ও সাইদুল ইসলাম, প্রতিদিনের মৌলভীবাজার ডেস্ক / ৭১ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৪

ঈদুল ফিতরের টানা ছুটিতে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ। উপজেলার টিলাঘেরা সবুজ চা বাগান, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধ, নয়নাভিরাম মাধবপুর লেক, হামহাম জলপ্রপাত, মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জি, ডবলছড়া খাসিয়া পুঞ্জিসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলোতে যেন পা ফেলার ঠাই নেই। পরিবার পরিজন নিয়ে আগত দর্শনার্থীরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অবলোকন করছেন। সবাই ব্যাস্ত নিজের হাতে থাকা মোবাইলে এই ক্ষনের মূহুর্তের ছবি তুলে স্বৃতি হিসেবে জমা রাখতে। দিন বাড়ার সাথে সাথে আগত পর্যটকদের গাড়ির সারি ও লম্বা ছিল এসব পর্যটন কেন্দ্র গুলো। পরিবার নিয়ে ঘোরার জন্য ঈদের এই উপলক্ষ হচ্ছে সব চেয়ে সুন্দর একটি সময় এমনটাই বলেছেন পর্যটন কেন্দ্রে ঘুরতে আশা পর্যটকরা।

এদিকে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের টিকিট কাউন্টার থেকে জানা যায়, এবার ঈদের দিন বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান থেকে সরকারের রাজস্ব আদায় হয়েছে প্রায় ১লক্ষ ৬০ হাজার টাকার মতো।

অন্যদিকে ঈদে পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল আলমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টীম ও টুরিস্ট পুলিশের একটা টিম মিলিয়ে মোট দুইটি টিম মিলিয়ে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত প্রতিটি জায়গায় টহল দিতে দেখা যায়।

জীব বৈচিত্র্যে ভরপুর বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, পদ্মকন্যা নয়নাভিরাম মাধবপুর লেক, ঝর্ণাধারা হামহাম জলপ্রপাত, ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী ধলই চা বাগানে অবস্থিত মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-ঐতিহ্যের বাহক বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধ, বন্যপ্রাণির অভয়ারণ্য রাজকান্দি বন, শমসেরনগর বিমানবন্দর, প্রাচীন ঐতিহ্যের বাহক লক্ষ্মীনারায়ণ দিঘী, ২০০ বছরের প্রাচীন ছয়চিরী দিঘী, শমসেরনগর বাঘীছড়া লেক, আলিনগর পদ্মলেক, মাগুরছড়া পরিত্যক্ত গ্যাসফিল্ড, ডবলছড়া খাসিয়া পুঞ্জি, মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জি, অপরূপ শোভামণ্ডিত উঁচু নিচু পাহাড়বেস্টিত সারিবদ্ধ পদ্মছড়া চা বাগান, শিল্পকলা সমৃদ্ধ মনিপুরী, প্রকৃতির পূজারী খাসিয়া, গারো, সাঁওতাল, মুসলিম মনিপুরী, টিপরা ও গারোসহ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্তার জীবন ধারা ও সংস্কৃতিসহ প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এই জনপদ পর্যটকদের মন ও দৃষ্টি কেড়ে নেয়।

পবিত্র ঈদুল ফিতরের টানা ছুটিতে এসব আকর্ষণীয় পর্যটন স্পটগুলো পর্যটকদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছিল। মাধবপুর লেক ও লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে দেখা মিলে দূর-দূরান্ত থেকে আগত পর্যটনপ্রেমী ভ্রমণ পিয়াসুদের। এদের মধ্যে সপরিবারে ও কাপলদের ঘুরতে আসা পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। ঈদের দিন বৃহস্পতিবার লোকজনের উপস্থিতি ছিল অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি। ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পর্যটকরা ছুটে এসেছেন জীব বৈচিত্র্যের অপরূপ সমাহার ঘুড়ে দেখতে।

ঈদের ছুটিতে লাউয়াছড়ায় জাতীয় উদ্যানে ঘুরতে আসেন ঢাকা থেকে বৃষ্টি ও আকাশ। তারা মূলত কাপল। এখানে এসে তারা জানান, লাউয়াছড়ার বন একটি সমৃদ্ধ বন। প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্য আর জীব বৈচিত্র্যে ভরপুর এই বনটি যে কেউ দেখলে মন জুড়িয়ে যাবে। তারা জানান, আমরা অকে বছর ধরে ট্রাই করছি আশার জন্য কিন্তু সময় হয়ে উঠেনা। বুধবার রাতে ঢাকা থেকে কমলগঞ্জের একটা রিসোর্টে উঠেছি। দুপুরে আমরা বের হয়ে লাউয়াছড়া ও মাধবপুর লেক ঘুড়ে দেখলাম। খুব ভালো লেগেছে। আরও ৩ দিন এখানে থাকবো। মৌলভীবাজার জেলার সবগুলো পর্যটন স্পর্টগুলো ঘুড়ে দেখার খেয়াল আছে।’

এদিকে সিলেট থেকে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধে ঘুড়তে আসেন আলম, মনি, পাপড়ি, সাইফুল ও মনি তারা এ প্রতিবেদককে বলেন,‘পরিবারের সবাইকে নিয়ে এখানে এসেছি। খুবই ভালো লাগছে। শুধু এই দুই জায়গা না চা বাগানসহ মনিপুরি পাড়া দেখেছি খুব ভালো লেগেছে। মন চাচ্ছে না চল যেতে। তারপরও যেতে হচ্ছে। সিলেট যাব জাফলং ও সাদা পাথর। আবার যেকোন দিন ছুটি পেলে চলে আসবো।’

লাউয়াছড়া টিকেট কালেক্টর শাহিন আহমদ জানান, এই প্রথম পর্যটকের উপচেপড়া ভির ছিল এমন। যা অন্যান্য বছরের চেয়ে অনেক বেশি। বলা যেতে পারে রেকর্ড ভেঙ্গেছে। একদিনে এত পর্যটক কখনো আগে আসেনি। প্রায় ২ হাজার ৭শত পর্যটক আসে আজ লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে। সরকারের রাজস্য আদায় হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার মতো। আমরা পর্যটকদের সামাল দিতে হিমসিম খেতে হয়েছে। এভাবে আগে কখনো হয়নি।’

লাউয়াছড়া ইকো টুরিস্ট গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সহসাধারণ সম্পাদক মো. আহাদ মিয়া বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে লাউয়াছড়াসহ সব পর্যটনকেন্দ্রে প্রচুর পর্যটকের আগমন হয়। ঈদের দিন বৃষ্টি থাকলেও পর্যটকের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো ছিল। কিন্তু ঈদের পরের ৭ দিন পর্যন্ত পর্যটক বাড়বে বলে তিনি মনে করেন।’

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের লাউয়াছড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, ‘এ ঈদের অন্যান্য সময়ের তুলনায় পর্যটকের সমাগম অধিক ঘটেছে। তবে ঈদে পর্যটকদের উপস্থিতি সব সময়েই বেশি হয়ে থাকে।ঈদের দিন থেকে ১০দিন পর্যটকের আগমন বেশি লক্ষ করা যায়।’

শ্রীমঙ্গল টুরিস্ট পুলিশের দায়িত্বরত এসআই বিশাল সিংহ জানান, ঈদের দিন সকাল থেকেই কমলগঞ্জের সকল পর্যটন এলাকায় টুরিস্ট পুলিশ কাজ করছে। নিরবিঘ্নে পর্যটকরা যেন ঘুড়তে পারে সে জন্য আমরা তাদের নিরাপত্তার জন্য পর্যবেক্ষন করছি। আজ সারাদিন লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে আমি ছিলাম।’


আরো সংবাদ পড়ুন...
এক ক্লিকে বিভাগের খবর