প্রতিবছরের মতো এবারও রমজানের শুরু থেকেই বেশি বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। চলতি মার্চ মাসের প্রথম ২২ দিনে বৈধ বা ব্যাংকিং চ্যানেলে ১৪১ কোটি মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ দেশে এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ১৫ হাজার ২০৮ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১১০ টাকা ধরে)। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গতকাল রোববার প্রকাশিত হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এ তথ্য জানা গেছে।
রোজা ও ঈদকে সামনে রেখে অর্থনীতির এই সূচক আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদরা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চলতি মার্চের প্রথম ২২ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১৪১ কোটি ৪৪ লাখ মার্কিন ডলার (১৪১৪ দশমিক ৪৫ মিলিয়ন)। তার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৮ কোটি ২৫ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ২ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১২০ কোটি ৪৮ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫৭ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।
২০২৪ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ২১১ কোটি ৩১ লাখ (২.১১ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। ফেব্রুয়ারি মাসে তার চেয়েও বেশি ২১৬ কোটি ৬০ লাখ (২.১৬ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছেন, যা ছিল আট মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
ফেব্রুয়ারি মাসে গত বছরের ফেব্রুয়ারির চেয়ে ৩৯ শতাংশ বেশি রেমিট্যান্স এসেছিল। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ১৫৬ কোটি ৪ লাখ (১.৫৬ বিলিয়ন) ডলার এসেছিল।
গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে এসেছিল প্রায় ২ বিলিয়ন (১৯৯ কোটি ১২ লাখ) ডলার। তার আগের দুই মাস অক্টোবর ও নভেম্বরেও বেশ ভালো রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। অক্টোবরে এসেছিল ১৯৭ কোটি ৭৫ লাখ (১.৯৮ বিলিয়ন) ডলার; নভেম্বরে ১৯৩ কোটি (১.৯৩ বিলিয়ন) ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) ১৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৭ দশমিক ৬১ শতাংশ বেশি।
২০২২-২৩ অর্থবছরে ২১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে, যা ছিল আগের অর্থবছরের (২০২১-২২) চেয়ে ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ বেশি।
আগের ২০২১-২০২২ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার, যা সর্বোচ্চ পরিমাণ রেমিট্যান্স।
ব্যাংকগুলোর আড়াই শতাংশ বাড়তি প্রণোদনায় প্রবাসী আয় বাড়ছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকাররা। এ ছাড়া অনেক ব্যাংক বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বেশি দামে রেমিট্যান্স সংগ্রহ করায় প্রবাসী আয় বাড়ছে বলে জানিয়েছেন তারা।