মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের কানিহাটি চা বাগানের নারী চা শ্রমিক কুঞ্জ বালা মৃর্ধা (৫০)কে চা বাগানে কাজ শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে দ্রুতগামী প্রাইভেট কার চাপায় তার মৃত্যু হয়। পরে চা শ্রমিকরা সাড়ে ৩ঘন্টা রাস্তা অবরোধ করে রাখে। শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে উপজেলার চাতলাপুর সড়কের ক্যামেলিয়া হাসপাতালের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত কুঞ্জ বালা মৃর্ধা বাগানের অফিস লাইনের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। রাত সাড়ে ৮টায় অবরোধ স্হগিত করে শ্রমিকরা।
স্থানীয় চা শ্রমিকরা জানান, বেপরোয়া কারের আঘাতে নিহত হওয়ার প্রতিবাদে ঘাতক কার আটক এবং ড্রাইভারকে আইনের আওতায় শাস্তি ও ক্ষতিপুরনের দাবীতে চাতলাপুর এবং শমশেরনগর রাস্তা অবরোধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ চা শ্রমিকরা। খবর পেয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এসে বিক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত করেন।
এসময় তারা বলেন, ২৪ ঘন্টার মধ্যে ঘাতক গাড়ি ও ড্রাইভারকে আটক, রাস্তায় স্পিড ব্রেকার ও মৃত ব্যক্তিকে ক্ষতিপুরন দেওয়ার ঘোষনা দিলে অবরোধ স্থগিত করা হয়।
চা ছাত্র যুবক পরিষদ কানিহাটি চা বাগানের সাধারণ সম্পাদক সৌরভ বীন জানান, ‘কানিহাটি চা বাগানের শ্রমিক কুঞ্জ বালা মৃর্ধা সেকশনে কাজ শেষে বাড়ি ফিরছেন। বিকাল ৫ টার দিকে ক্যামেলিয়া হাসপাতালের সামনের পাকা রাস্তা পারাপারের সময় দ্রুতগামী একটি প্রাইভেট কার তাকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে শ্রমিকরা তাকে উদ্ধার করে বাগানের ক্যামেলিয়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে আমরা প্রায় সাড়ে ৩ ঘন্টা সড়ক অবরোধ করে রাখি। প্রশাসনের আশ্বস্ত পেয়ে আমরা অবরোধ স্থগিত করি। উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা সৎকারের জন্য ১৫হাজার টাকা উপস্থিত সময় দিয়েছে।
শমশেরনগর ইউপি চেয়ারম্যান মো. জুয়েল আহমেদ বলেন, ‘ঘটনার পরই আমরা সেখানে যাই। তাদের গিয়ে শান্তনা দেই। উপস্থিত সময়ে তাদের কিছুটা সহযোগীতা করা হয়েছে এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরও করা হবে। তারা কিছু দাবি তুলেছেন অবরোধ করে। সেটা প্রশাসন আশ্বস্ত দিয়েছে।’
কমলগঞ্জ থানার শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক (তদন্ত) শামীম আকনজী জনান, ‘নিহত ও রাস্তা অবরোধের খবর জানার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে আছে। রাস্তা অবরোধ করে চা শ্রমিক এখন কিছু দাবী তুলছে। আমরা তাদের আশ্বস্ত করেছি দাবি পূরণ করে দিব। আমরা সিসি ফুটেজ দেখে গাড়ি ও ড্রাইভারকে আটক করার জন্য সর্বচ্চ চেষ্টা করছি। আশা করছি দ্রুত সময়ের ভিতরে আটক করতে পারবো।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, মৃত ব্যক্তির সৎকারের জন্য আর্থীকভাবে সহযোগীতা করা হয়েছে। গাড়ি ও চালককে আটকের চেষ্টা চলছে। তারা কিছু দাবী তুলেছেন সেটা প্রশাসন দেখবে।
উল্লেখ্য- চা বাগানের নারী চা শ্রমিক কুঞ্জ বালা মৃর্ধা মৃত্যুর পরপরই এ ঘটনার প্রতিবাদে কানিহাটি চা বাগানে সাধারণ চা শ্রমিকরা শমসেরনগর-চাতলাপুর সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। বিকাল ৫টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৮টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছিল বিক্ষুব্ধ নারী পুরুষ চা শ্রমিকরা।