মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে আন্তর্জাতিক উল্লুক দিবস ২০২৫ উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সকালে শহরের মৌলভীবাজার সড়কের গ্র্যান্ড তাজ সম্মেলন কক্ষে বন বিভাগ এবং ওয়েস্টার্ন হুলক গিবন কনজারভেশন প্রজেক্ট অব বাংলাদেশ ও মারিয়াং ফর কমিউনিটি অ্যান্ড ইকোসিস্টেম সার্ভিসেস এর আয়োজনে এ সভায় বক্তব্য রাখেন বন বিভাগের সাবেক প্রধান বন সংরক্ষক (সিসিএফ) ইশতিয়াক উদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক অধ্যাপক ড.এম ফরিদ আহসান, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম, মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের গবেষণা কর্মকর্তা সোহেল মাসুদ, ওয়েস্টার্ন হুলক গিবন কনজারভেশন প্রজেক্ট অব বাংলাদেশ ও মারিয়াং ফর কমিউনিটি অ্যান্ড ইকোসিস্টেম সার্ভিসেস এর নির্বাহী পরিচালক আন্তৃনী মুখিম, খাসি সোশ্যাল কাউন্সিল এর সভাপতি জিডিশন প্রধান সুচিয়াং ও সাংবাদিক সালাহউদ্দিন শুভ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে স্থানীয় খাসিয়া সম্প্রদায়ের ভূমিকার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়, যারা বনাঞ্চলে বসবাস করে এবং উল্লুকসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। কমিউনিটি-নেতৃত্বাধীন এই সংরক্ষণ প্রচেষ্টাগুলিকে ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। দিবসটি পালনের মূল উদ্দেশ্য ছিল মানুষের মধ্যে উল্লুক সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং তাদের রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে উৎসাহিত করা। বক্তারা বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

সভায় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন বনে উল্লুক রয়েছে। বন ধ্বংস, খাদ্য সংকট ও মানবসৃষ্ট নানা কারণে এই বিপন্ন প্রাণীর সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। তাই উল্লুক সংরক্ষণে গণসচেতনতা সৃষ্টি এবং তাদের আবাসস্থল রক্ষার সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
উল্লেখ্য- অতি বিপন্ন প্রাণী উল্লুকের জন্য দেশে যে কয়টি আবাসস্থল অবশিষ্ট আছে, তার মধ্যে অন্যতম লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান। মৌলভীবাজার জেলায় অবস্থিত এক হাজার ১২৫০ হেক্টর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত সংরক্ষিত এই বন জীববৈচিত্র্যের সমৃদ্ধ আবাসস্থল। সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৯৬ সালে বন্যপ্রাণী আইনের অধীনে লাউয়াছড়া বনকে জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করে এবং এর পরিবেশগত স্বীকৃতি দেয়। বর্তমানে এই বনে ৪৬০ প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণী রয়েছে।
