নরসিংদীর ৬টি উপজেলায় এ বছর বাঙ্গির বাম্পার ফলন হয়েছে। ন্যায্য মূল্য পাওয়ায় এবং ফলন বেশি হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। নরসিংদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে নরসিংদীর ৬টি উপজেলায় ১০৫ হেক্টর জমিতে বাঙ্গি চাষ করা হয়েছে। বিশেষ করে সদর উপজেলার চরাঞ্চল আলোকবালী, নেকজানপুর, বসখালিপুর, খোদাদিল্লাহ ও রায়পুরা উপজেলার চরমধুয়া, নিলক্ষা, বাঁশগাড়ী, শ্রীনগর, চাঁনপুর, মির্জারচর, পাড়াতলী ইত্যাদি এলাকার অধিক জমিতেই বাঙ্গির চাষ করা হয়েছে। এসব এলাকার যেদিকেই চোখ যায় সেদিকেই কেবল সবুজ হলুদ বাঙ্গির সমারোহ।
এ বছর বাঙ্গির আগাম ফলন ও দামে সন্তুষ্ট চাষিরা। স্থানীয় কৃষকরা কম পুঁজিতে অধিক ফলন ও ভালো দাম পাওয়ায় প্রতিবছরই এখানকার চাষিরা বাঙ্গি চাষ করে থাকেন। বাঙ্গির বাম্পার ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকদের মুখে ফুটেছে হাসির ঝিলিক। জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে বাঙ্গি বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বিক্রেতারা এগুলো প্রতি পিস ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি করছেন।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চরাঞ্চলের দোআঁশ মাটিতে দুই জাতের বাঙ্গির চাষ করা হয়। বেলে ও এঁটেল মাটি। তবে এ বছর বেলে মাটিতে বাঙ্গির আবাদ বেশি হয়েছে। বেলে মাটির বাঙ্গির খোসা পাতলা, শাঁস নরম ও মিষ্টি কিছুটা কম। এঁটেল মাটির বাঙ্গি শাঁস শক্ত, তবে বেশ মিষ্টি। এ ছাড়া বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে বাঙ্গির পাশাপাশি মরিচ ও মিষ্টি কুমড়ার প্রচুর চাষ হয়। জমি থেকে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত কাঁচা ও পাকা বাঙ্গি তুলে জমিতে স্তূপাকারে করে রাখেন। সেখান থেকে নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পাইকাররা বাঙ্গি কিনে রাজধানীসহ জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন বাজারে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বাঙ্গি বিক্রি করে থাকেন।
এ নিয়ে রায়পুরা উপজেলার মির্জারচর গ্রামের কৃষক আফাজ উদ্দিন জানান, এ বছর তিনি ২ হেক্টর জমিতে বাঙ্গি আবাদ করেছেন। প্রতি হেক্টরে তার খরচ হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। এ বছর তিনি প্রায় দেড় লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন। তিনি আরও জানান, জমিতেই পাইকারি প্রতি পিস বাঙ্গি ৮০ থেকে ৯০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
নরসিংদী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আজিজুর রহমান জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় ১০৫ হেক্টর জমিতে বাঙ্গির আবাদ হয়েছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাঙ্গির ফলনও ভালো হয়েছে। বাঙ্গিতে শর্করা, ভিটামিন ও মিনারেল থাকায় বাজারেও বাঙ্গির ভালো চাহিদা রয়েছে। এ ছাড়া কম সুগার থাকায় ডায়াবেটিস রোগীদের কাছে বাঙ্গি খুব জনপ্রিয়।