মৌলভীবাজারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মিজানুর রহমান শরীফ জেলায় যোগদানের পর থেকে সরকারি গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। তিনি যোগদানের পর থেকে কমে গেছে অভিযানও।
তিনি বিভিন্ন জায়গায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গিয়ে টাকা না দিয়ে নিচ্ছেন সেবা। এছাড়াও চা বাগানের পাট্টার বাংলা মদের লাইসেন্সধারী ব্যবসায়ীদের মাসিক চাঁদা দিতে বাধ্য করছেন, না দিলে বিভিন্নভাবে হয়রানি করছেন। এ নিয়ে ব্যবসায়ীরা মাদকদ্রব্যের মহাপরিচালক বরাবরে দিয়েছেন অভিযোগ।
জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর মিজানুর রহমান শরীফ মৌলভীবাজারে যোগদানের পর থেকে করছেন এ রকম আচরণ। তিনি যোগদানের পর থেকে সরকারি গাড়ি পরিবার নিয়ে বিভিন্ন পর্যটন স্পটসহ ব্যক্তিগত কাজে সরকারি জ্বালানিতেই ব্যবহার করছেন। পরিবার নিয়ে প্রায় সপ্তাহের শুক্রবার বা সুবিধাজনক সময়ে জেলা সদরের একটি রিসোর্টে গিয়ে সরকারি ক্ষমতা প্রয়োগ করে ফ্রিতে রিসোর্টের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়ে থাকেন। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ ওই রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ। মাদকের মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয়ে তারা কিছু বলতে পারছেন না।
এ ছাড়া তিনি উপপরিচালক হিসেবে মৌলভীবাজারে যোগদানের পর থেকেই চা বাগানের লাইসেন্সধারী পাট্টার ব্যবসায়ীদের কাছে মাসে ২০ থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা দাবি করেন। ভয়ে প্রথমে কেউ কেউ টাকা প্রদান করলেও বর্তমানে তারা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। সম্প্রতি জেলার বিভিন্ন বাগানের ২৩ জন ব্যবসায়ী মাদকদ্রব্যের মহাপরিচালক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এর অনুলিপি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসকসহ ৪ জনকে দেওয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপপরিচালক মিজানুর রহমান শরীফ রাঙ্গামাটি জেলায় থাকাবস্থায় তার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ ওঠে। পরে তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়। সেখানেও তিনি বেপরোয়া ছিলেন।
অভিযোগকারী লংলা পাট্টা, কাপনা পাহাড় পাট্টা, হলিছড়া পাট্টা, ভাড়াউড়া পাট্টার ব্যবসায়ীসহ আরও কয়েকজন জানান, বর্তমান এই উপপরিচালকের হয়রানিতে তারা অতিষ্ঠ। ঠিকমতো ব্যবসা করতে পারছেন না। তারা বলেন, এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে তারা ক্ষতির মুখে পড়বেন এবং সরকার অনেক টাকা রাজস্ব হারাবে।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে কয়েকদিন ধরে উপপরিচালক মিজানুর রহমান শরীফের সরকারি মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। পরে গতকাল বুধবার ইফতারের পর কল দেওয়া হলে তিনি বলেন, ‘এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমার অফিসে আসেন, বিস্তারিত বলি।’
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম বলেন, ‘একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’