২০ বছরের শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবল ক্যারিয়ার, বয়সটাও চল্লিশ ছুঁইছুঁই; কিন্তু পর্তুগিজ তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো যেন এখনো চির তরুণ। রোনালদো যেন ওয়াইনের মতো- যতই পুরোনো হচ্ছে, ততই স্বাদ বাড়ছে। এ বয়সে এসে যখন সবাই বুট জোড়া তুলে রেখে একটু আরাম-আয়েসে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে চান, সিআরসেভেন তখন সৌদি আরবে সাজাচ্ছেন গোলের পসরা। একটুও কমেনি তার পুরোনো সেই গতি কিংবা শারীরিক শক্তি। তরুণদের চেয়েও তিনি তরুণ। বয়সকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এভাবেই উঁচুমানের খেলা চালিয়ে যেতে চান এই পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড।
সৌদি ক্লাব আল নাসরের হয়ে চলতি মৌসুমে ৪১ ম্যাচ খেলে ৪২ গোল করেছেন রোনালদো। লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতাও তিনিই। স্বাভাবিকভাবেই গোল বুট জয়েরও দ্বারপ্রান্তে তিনি। ক্যারিয়ারের এমন পড়ন্ত বেলায়ও নিজেকে ধারাবাহিক রাখতে পেরে গর্বিত বোধ করেন তিনি। শুধু তাই নয়, অবিশ্বাস্যও লাগে তার কাছে।
এক পডকাস্টে রোনালদো বলেন, ‘এই বয়সে এখনো সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে যাওয়ায় আমি গর্বিত বোধ করি। এটাই আমাকে চালিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা দেয়। গত ২০ বছরে আমার ক্যারিয়ারের দিকে তাকালে দেখবেন, আমার মানটা উঁচুতে আছে। ২০ বছর ধরে শীর্ষ পর্যায়ে থাকাটা অবিশ্বাস্য। আমি সেটা করছি এবং করতে থাকি। আমার কাছে এটি একটি বড় অর্জন।’
এই বয়সে এসেও শীর্ষ পর্যায়ে থাকা যে সহজ নয় সেটা মানেন, ‘এই (শীর্ষ) পর্যায়ে থাকাটা সহজ নয়। নিজেকে তাড়না দিতে, অনুপ্রাণিত করতে, চালিয়ে যেতে, গোল করতে, ভালো ছন্দে থাকতে, উঠে আসা তরুণ সিংহদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে শুধু শারীরিকভাবেই নয়, মানসিকভাবেও খুব ভালোভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। এটাই চ্যালেঞ্জ।’
ক্যারিয়ার দীর্ঘ করার জন্য প্রতিভা ও পরিশ্রম দুটোই দরকার বলে মনে করেন রোনালদো। একই সঙ্গে বজায় রাখতে হবে ধারাবাহিকতাও। তিনি বলেন, ‘প্রতিভা ছাড়া পরিশ্রম এবং পরিশ্রম ছাড়া প্রতিভা কিছুই নয়। দুটোই একসঙ্গে থাকা দরকার। আমার মধ্যে দুটোই আছে। অবশ্য এটা বলতে পারি না, একটার চেয়ে অন্যটা বেশি আছে। ছোট বিষয়গুলোই পার্থক্য তৈরি করে দেয়। তাই ধারাবাহিকতা ধরে রাখা সবচেয়ে কঠিন জিনিস।’
রোনালদো একটি ব্র্যান্ড! বিশ্বের অনেক তরুণই তার মতো হতে চায় কিন্তু সেটা সহজ বলেই জানালেন তিনি, ‘সবাই ক্রিস্টিয়ানো হতে চায়, কিন্তু তেমনটা হওয়া কঠিন। নিজেকে শৃঙ্খলার মধ্যে রাখাটা সবচেয়ে কঠিন ব্যাপার। কখনো কখনো নিজের মনের বিরুদ্ধে লড়াই করি আমি, আমরা সবাই মানুষ। অবশ্যই প্রতিদিন জিমে যেতে আমারও ভালো লাগে না, কারোরই লাগে না; কিন্তু তা করতে হবে।’