সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ১১:৪১ অপরাহ্ন

সড়ক সেজেছে কৃষ্ণচূড়ার ফুলে

সালাহউদ্দিন শুভ / ৯৪ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশিত : রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪
ভানুগাছ শ্রীমঙ্গল সড়ক সেজেছে কৃষ্ণচূড়ার ফুলে

ছয়ঋতুর বাংলাদেশে এখন গ্রীষ্মকাল চলছে। কাঠফাটা রোদ্দুর আর অসহ্য গরমে নিস্তেজ হয়ে পড়েছে প্রাণিকুল। গ্রীষ্মের দাবদাহে হাঁসফাস করছে জনজীবন। তবে সব ক্লান্তি ভুলিয়ে দিতে কৃষ্ণচূড়া ও সোনালু ফুল প্রকৃতিতে মেলে ধরেছে তাঁর আপন রঙ। চায়ের রাজধানী খ্যাত পর্যটন নগরী মৌলভীবাজার জেলার পথে-প্রান্তরে কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম ফুল এবং সোনালুর অপরূপ সৌন্দর্যে মুগ্ধ হচ্ছেন দর্শনার্থীরা।

রোববার ১৯ মে বিকেলে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলার প্রধান প্রধান সড়কসহ উপজেলার বিভিন্ন অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার ও পথঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে চোখে পড়ছে কৃষ্ণচূড়া এবং সোনালু ফুলের অপরূপ সৌন্দর্য। টুকটুকে লাল কৃষ্ণচূড়া ফুল প্রকৃতিকে অপরূপ সাজে সাজিয়ে রঙিন করে তুলেছে। দেশের ব্যস্ততম পর্যটন নগরীর সড়কগুলো প্রকৃতির অপরুপ রুপে সাজে সজ্জিত এই কৃষ্ণচূড়ায়। এছাড়ও স্থানীয় ছাত্র ছাত্রী সহ অনেকেই আসেন ছবি তুলতে আবার অনেককে বিশ্রাম নিতে দেখা যায় কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে।

কৃষ্ণচূড়া বাঙালির কাছে অতিপরিচিত একটি ফুল। বাঙালির কবিতা, সাহিত্য, গান ও নানা উপমায় এর রূপের মোহনীয় বর্ণনা বিভিন্ন ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। মোহনীয় রূপে প্রকৃতির শোভা বর্ধনকারী এ বৃক্ষ এখনো গ্রামবাংলার পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন স্থানে দেখা যায়। প্রকৃতিতে গ্রীষ্মের ছোঁয়া পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই কৃষ্ণচূড়া তার রক্তিম আভা ছড়ানোর মাধ্যমে জানান দেয়-সে এখনও টিকে আছে প্রকৃতিকে সাজাবে বলে।

ঝুলন চক্রবর্তী নামে এক পথচারী বলেন, ‘আলীনগর চা বাগান রোডের মন্দীরের পাশে এই জায়গাটা খুবই ঠান্ডা। চা বাগান এলাকা থেকে আসা বাতাসে মন জুড়ায়। তাছাড়া এখানে অনেকেই আসে ঘুরতে ও ছবি তুলতে। আবার অনেকে গাড়ি থামিয়ে বিশ্রাম নেয়।’

কমলগঞ্জ মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রনেন্দ্র কুমার দেব বলেন, ‘গ্রীষ্মের প্রকৃতিতে গ্রামে একসময় অনেক সোনালু গাছ চোখে পড়তো। এছাড়াও হাট, বাজার গ্রামগঞ্জের চারপাশেও দেখা যেত হলুদিয়া সাজের সোনালুর উপস্থিতি। এখন হাতেগোনা কিছু গাছ দেখা যায় পথে প্রান্তরে। কারণ হিসেবে তিনি মনে করেন, এ গাছের কাঠ খুব একটা দামি নয় বলে কিংবা গাছটি খুব ধীরে বাড়ে বলেই কেউ আর তেমন উৎসাহ নিয়ে সোনালু গাছ রোপণ করেন না। প্রাকৃতিকভাবে যা হয়, তার ওপর ভর করেই হলুদ-সোনালি রঙের সৌন্দর্য বিতরণ করে অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে সোনালু।’

কমলগঞ্জের কবি, লেখক ও গবেষক আহমদ সিরাজ জানান, `প্রকৃতি মেলে ধরেছে তার আপন রঙ। শহরের প্রতিটি রাস্তার অলিগলিতে দেখা মেলে কৃষ্ণচূড়া জারুল ও সোনালুর। প্রকৃতির এমন সৌন্দর্য দেখে অনায়াসে যে কেউ প্রকৃতির প্রেমে পড়তে বাধ্য হবে। এজন্যই কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছেন, ‘কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে আমি ভুবন ভোলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে। ইট-পাথর আর কোলাহলের নগরীতে যেন সব ক্লান্তি ভুলিয়ে দিতেই ফোটে কৃষ্ণচূড়া। তার রঙ যেন সতেজ করে দেয় পথিকের মন।

কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার রায় জানান, ‘কৃষ্ণচূড়া বৈজ্ঞানিক নাম ডেলোনিক্স রেজিয়া। সাধারণত এপ্রিল থেকে জুন মাসে কৃষ্ণচূড়া ফোটে। কৃষ্ণচূড়ার আদিনিবাস পূর্ব আফ্রিকায়। আর সোনালু ফুলের আদি নিবাস হিমালয় অঞ্চলে। সোনালু ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম ক্যাসিয়া ফিস্টুলা। কৃষ্ণচূড়া ও সোনালু ফুল এ উপজেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অনেকগুনে বাড়িয়ে দিয়েছে।’


আরো সংবাদ পড়ুন...
এক ক্লিকে বিভাগের খবর