শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন শেষ পর্যন্ত রূপ নিয়েছিল গণমানুষের আন্দোলনে। রাস্তায় নেমে এসেছিল নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। বাদ যাননি ক্রিকেটাররাও; অনেক ক্রিকেটারই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমর্থন জানিয়েছেন শিক্ষার্থীদের। কিন্তু ভিন্ন ছিল মাশরাফি বিন মুর্তজা। আন্দোলন নিয়ে নিশ্চুপ থাকায় ভক্ত-সমর্থকদের ক্ষোভের মুখে পড়েন সাবেক এই অধিনায়ক।
গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পলায়নের পর ওই দিনই পুড়িয়ে দেওয়া হয় মাশরাফির নড়াইলের বাড়ি। সবকিছু নিয়ে এত নিশ্চুপ থাকলেও এবার মুখ খুলেছেন তিনি। কথা বলেছেন দেশের একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও খেলাধুলাভিত্তিক ইউটিউব চ্যানেল ‘নট আউট নোমান’-এ।
সাক্ষাৎকারগুলোতে নিজের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন মাশরাফি। তিনি বলেন, ‘এখন এগুলোর উত্তর দেওয়াটা (নীরব থাকার) আমার কাছে মনে হয় একদম শুধু শুধু হবে। আর যদি এককথায় উত্তর দিই, তাহলে বলতে হয় আমি আসলে ব্যর্থ হয়েছি এখানে। অ্যাবসুলেটলি ব্যর্থ হয়েছি।’
কোটা সংস্কার যে যৌক্তিক ছিল সেটা জানিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘দ্বিতীয় কথা হচ্ছে কথা যদি বলতে হতো, যৌক্তিক কোটা সংস্কার নিয়ে যে আলোচনা হচ্ছিল শুরুতে; সবাই যখন চেয়েছিল আমি কথা বলি। তখন যৌক্তিকভাবে কোটা সংস্কার হবে এটা পরিষ্কারভাবে বোঝা যাচ্ছিল বা আমার কাছে মনে হচ্ছিল কোটা সংস্কার হয়তো হবে।’
নিজের স্ট্যাটাসের প্রতিক্রিয়া কেমন হবে, সেটা নিয়ে দ্বিধায় ছিলেন মাশরাফি। তিনি বলেন, ‘কিন্তু তার পরে যে ঘটনাগুলো ঘটতে থাকল, এমন একটা পরিস্থিতি হলো যে, যখন সবাই চাচ্ছে আমি একটা স্ট্যাটাস দিই বা পাশে থাকি। তখন পরিবেশটা এমন জায়গায় গিয়েছে, আমার কাছে মনে হচ্ছিল আমি যদি এখন স্ট্যাটাস দিই বা যেকোনো কিছু লেখি; সেটাকে কেন্দ্র করে যদি আরও বড় কিছু হয়ে যায়, ওই জিনিসটা সামাল দেওয়ার সক্ষমতা আমার আছে কি না।’
সরকারের সঙ্গে কথা বলে ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনা করতে চেয়েছিলেন মাশরাফি, ‘সবকিছু মিলিয়ে আসলে ঘটনাগুলো এত দ্রুত ঘটেছে, আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি। তবে আমি চেষ্টা করিনি সেটা নয়। আরেকটা বিষয় হলো আমি স্ট্যাটাসের ভেতর সীমাবদ্ধ থাকতে চাইনি। আমি চেয়েছিলাম ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলতে বা তাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে কিছু করা যায় কি না।’
নিজের বাড়ি পোড়ানো নিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘নড়াইলের বাড়িটা করেছিলাম মায়ের জন্য। এখন শেষ। অনেকেই বলেছেন মামলা করতে এবং ব্যবস্থা নিতে। ছবি-ভিডিও সবই আছে অনেকের কাছে। তবে আমি বলেছি, এসব করব না। আমার বাবাকেও বলে দিয়েছি। এখনকার সরকার বা ভবিষ্যতে নির্বাচন করেও যে সরকার আসুক, কারও কাছেই বিচাই চাইব না। কোনো অভিযোগ নেই।’