বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচি ঘিরে ফেনীতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে অন্তত আটজনের মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ফেনী ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আসিফ ইকবাল (আরএমও) বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
আজ রোববার সন্ধ্যায় চিকিৎসক আসিফ ইকবাল বলেন, নিহত ব্যক্তিদের বয়স ১৭ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। সবাই গুলিতে নিহত হয়েছেন।
নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৬ জনের নাম জানা গেছে। তাঁরা হলেন ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার উত্তর জায়লস্কর গ্রামের সরোয়ার জাহান মাসুদ, ফেনী সদর উপজেলার কাশিমপুর এলাকার বাসিন্দা শিহাব উদ্দিন, গাজী ক্রস রোডের ইশতিয়াক আহমেদ, সাইদুল হক; সোনাগাজী উপজেলার মান্দারী গ্রামের বাসিন্দা মো. সাকিব ও ফাজিলপুর এলাকার বাসিন্দা মো. সাঈদ। নিহত অপর দুজনের নাম জানা যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সকাল থেকে বিক্ষোভকারীরা অসহযোগ কর্মসূচির সমর্থনে মহীপাল এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করেন। তবে বেলা দুইটার দিকে মহীপাল সেতুর নিচে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের কর্মীরা মিছিল নিয়ে এলে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় মুহুর্মুহু গুলি, ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। সংঘর্ষে ৮ জন নিহত ছাড়াও ৩ গণমাধ্যমকর্মীসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষে হতাহত ব্যক্তিদের ফেনী ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। ময়নাতদন্ত ছাড়াই বিক্ষোভকারীরা নিহত ব্যক্তিদের লাশ নিয়ে গেছেন।
ফেনী সদর জেনারেল হাসপাতালে উপপরিচালক (তত্ত্বাবধায়ক) আবুল খায়ের মিয়াজি মুঠোফোনে প্রথম আলোকে জানান, লাশ মর্গে নিতে কিছু লোক বাধা দিয়েছে। মর্গে হামলার চেষ্টাও করা হয়। এ সময় হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরাও চলে গেছেন। নিরুপায় হয়ে লাশ বিনা ময়নাতদন্তে হস্তান্তর করতে হয়েছে।
এদিকে সংঘর্ষের একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা মহীপালের পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেন। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ছাড়াও ইটপাটকেলের আঘাতে অনেকে আহত হন।
ফেনীতে সকাল থেকে যাত্রীবাহী বাস বা অন্য কোনো যানবাহন তেমন দেখা যায়নি রাস্তায়। সকাল ১০টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মহীপাল এলাকায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেন। সড়ক অবরোধ করে পুলিশকে লক্ষ্য করে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। এ সময় পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পাল্টা কোনো পদক্ষেপ নেননি।