২ দিন পর পবিত্র ঈদ-উল-আযহা। বৃষ্টির মাঝেও শেষ মুহর্তে জমে উঠেছে ঈদ-বাজার। ভিড় শুধু পোশাকের দোকানগুলোতেই না। রয়েছে জুতা, অলংকার ও কসমেটিকসের দোকানেও। এছাড়াও ফুটপাতে মধ্য ও নিম্ন বিত্তের মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এসব ফুটপাত থেকে মানুষ সাধ্যের মধ্যে প্রিয়জনের জন্য কিনছেন পোশাক, জুতা, কসমেটিকস, অলঙ্কারসহ প্রয়োজনীয় নানা জিনিসপত্র। নিজের ও পরিবারের জন্য ঈদকে আনন্দঘন করতে সাধ্যমতো নতুন পোশাক কেনার চেষ্টা সবার।
শনিবার (১৫ জুন) দুপুরে কমলগঞ্জ উপজেলার ভানুগাছ বাজারে গেলে দেখা যায় শেষ মুহুর্ত্বে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার বিপণিবিতান ছাড়াও ফুটপাতের দোকানগুলোতে ক্রেতাসাধারণের সমাগম উপচে পড়া ভীড় দেখা যায়। ঈদের আমেজ দেখা গেলেও এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। এদিকে ঈদ বাজারকে নির্বিঘ্নে করতে তৎপর রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ভানুগাছ বাজার, শমশেরনগর বাজার, আদমপুর বাজার, মুন্সীবাজার ও শহীদনগর বাজার এলাকায় ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। ভিড় চোখে পড়েছে আবার দর্জির দোকানগুলোতেও। পোশাক ছাড়াও জুতা ও প্রসাধনীর দোকানে ভিড় বাড়ছে। অনেকে পোশাকের সঙ্গে ম্যাচিং জুয়েলারিও কিনে নিচ্ছেন। আবার ক্রেতাদের সামাল দিতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
ভানুগাছ বাজারের তাকওয়া ফ্যাশন ওয়ার এর প্রতিষ্টাতা রাজন আবেদীন রাজু জানান, ‘এবার ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে নতুন নতুন কালেকশন এসেছে। গরমকে প্রাধান্য দিয়ে ডিজাইনে নতুনত্ব আনা হয়েছে। শিশুদের পোশাকের পাশাপাশি শাড়ি, থ্রিপিস ও পাঞ্জাবি ও ছোটদের কাপড়ের চাহিদা রয়েছে। ভালো বিক্রি হচ্ছে। ‘
কাপড়ের ব্যবসায়ী মো. সুলতান জানান, ‘মেয়েদের থ্রিপিস বেশি বিক্রি হচ্ছে। সব কিছুর দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় এর প্রভাব কাপড়চোপড়ের ওপরও পড়েছে।’
কসমেটিক ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম জানান, ‘দোকারে ক্রেতারা আসছে ঠিক। কিন্তু জিনিসপত্র দেখে পছন্দ হলেও নিচ্ছেন না। দাম অতিরিক্ত হওয়ায়। তিনি বলেন, আগে যে জিনিসের দাম ১শত টাকা ছিল বর্তমানে সেটার দাম ১৫০টাকা। ক্রেতারা আগের দামেই জিনিস নিতে চাচ্ছেন। তারা দাম যে বাড়ছে সেটা মানতে চাচ্ছেন না। সেজন্য আমাদের অবস্থা খারাপ।’
শপিং করতে আসা গৃহবধূ নাজমা বেগম, পলি আক্তার, শিক্ষার্থী ফাহমিদা ইয়াসমিন জানান, ‘এবার পছন্দের সবকিছুই পাওয়া যাচ্ছে মার্কেটে। দাম অনেকটা বেশি হলেও পছন্দের শাড়ি ও জামাকাপড় কেনা যাচ্ছে। তবে বৃষ্টির কারণে দোকানগুলো ঘুড়ে ঘুড়ে দেখা সম্ভব হচ্ছে না। যে দোকানে ডুকছি পছন্দ না হলেও সেখান থেকে নিতে হচ্ছে।’ তারা আরও বলেন,ঈদুল ফিতরের সময় আমরা কিনেছি অনেক কিছু তাই স্বল্প পরিসরে কিছু নিচ্ছেন তারা।’
কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল আলম জানান, ‘উপজেলার প্রতিটি মার্কেট ও বিপণি বিতানগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নজরদারি রাখছে। কোনো প্রকার সমস্যা যাতে না হয় সে ব্যাপারে প্রশাসন তৎপর রয়েছে।’
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজার জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. শফিকুর রহমান বলেন, ‘ঈদকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা যাতে করে অতিরিক্ত দাম না রাখতে পারে সেদিকে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের নজরদারি রয়েছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘উপজেলার বিপণিবিতানগুলোতে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কেনাকাটা চলছে। কেনাকেটা নির্বিঘ্ন করতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’