কাছে গিয়েও শেষ হলো না বাংলাদেশের সিরিজ জয়ের স্বপ্ন। বাড়ল অপেক্ষার প্রহর। দ্বিতীয় ওয়ানেডেতে জয় ছিনিয়ে নিল শ্রীলঙ্কা। সিরিজ জয়ের জন্য এখন বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হবে শেষ ম্যাচ পর্যন্ত। তৌহিদ হৃদয়ের ক্যারিয়ারসেরা ব্যাটিং আর সৌম্য সরকারের রানে ফেরার ইনিংসে ভর করে ২৮৬ রানের লড়াকু পুঁজি পেয়েছিল বাংলাদেশ।
তাসকিন-শরিফুলদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে জয়ের আশাও জেগেছিল টাইগার শিবিরে। কিন্তু পাথুম নিশাঙ্কা আর চারিথ আশালঙ্কার দ্ব্যর্থহীন জুটিতে সেটা হাতছাড়া হয়েছে বাংলাদেশের। এই এক জুটিতেই ম্যাচটা নিজেদের করে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। শেষ পর্যন্ত জয় পেয়েছে ৩ উইকেটের। আশা জাগিয়েও শেষদিকের কিছুটা খাপছাড়া বোলিংয়ে সিরিজে এল সমতা। শেষ ম্যাচটা দাঁড়াল বাঁচা-মরার ম্যাচে।
প্রথমে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের ইনিংসটি ছিল উত্থান-পতনের। শূন্য রানে লিটন ফিরলেও সেটাকে সামলে নেয় নাজমুল শান্ত আর সৌম্য সরকার। দুজন মিলে গড়েন ৭৫ রানের জুটি। এরপর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত (৪০) ফিরে গেলে সৌম্যকে সঙ্গ দেন তৌহিদ হৃদয়। তারা দুজনে গড়েন ৬৫ রানের জুটি। হাসারাঙ্গাকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সৌম্য (৬৮)। এরপর উইকেটে এসে দ্রুতই ফিরে যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (০)। এতে বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ।
দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া বাংলাদেশকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন মুশফিকুর রহিম আর তৌহিদ হৃদয়। ৩২তম ওভারে মুশফিককে ফিরিয়ে আবারও লঙ্কানদের ব্রেক-থ্রু এনে দেন হাসারাঙ্গা। ২৮ বলে ২৫ রান করে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন মুশফিক। ১২ রানেই হাসারাঙ্গার আরেক শিকার হন মিরাজ। এতে স্কোর আড়াইশ হওয়া নিয়েও সংশয় তৈরি হয়।
তবে শেষদিকে হৃদয়-তানজিম সাকিব আর হৃদয়-তাসকিন জুটিতে সেই শঙ্কা উড়ে যায়। সপ্তম উইকেটে সাকিবের সঙ্গে ৪৭ এবং অষ্টম উইকেটে তাসকিনের সঙ্গে ২৩ বলে ৫০ রানের দারুণ দুই জুটিতে স্কোরটা ২৮০ পেরিয়ে যায়। ১০ বলে ১৮ রান করেন তাসকিন।
বাকিদের আসা-যাওয়ার মিছিলে তৌহিদ হৃদয় ছিলেন উইকেট কামড়ে। ইনিংস শেষ করে ৯৬ রানে অপরাজিত থেকেই ফিরেছেন তিনি। হৃদয়ের ইনিংসটি ছিল হৃদয়ছোঁয়া। ১০২ বলের ইনিংসে তিনি ছক্কা হাঁকিয়েছেন ৫টি আর চার মেরেছেন ২টি। এমন সোনাঝরা ইনিংস শেষে হয়তো হৃদয়ের আক্ষেপ থাকবে শতক না পাওয়ার। হয়তো আক্ষেপ থাকবে তবুও ম্যাচ হারার।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি শ্রীলঙ্কার। প্রথম ওভারেই ওপেনার আভিস্কা ফার্নান্দোকে (০) ফিরিয়ে দেন শরিফুল ইসলাম। এরপর চড়াও হন পাথুম নিশাঙ্কা আর কুশল মেন্ডিস। সেটা বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে দেননি তাসকিন আহমেদ। ষষ্ঠ ওভারে ফেরান মেন্ডিসকে (১৬)। পরের ওভারেই শরিফুল ফেরান সাদিরা সামিরা বিক্রমাকে (১)। এতে অনেকটা চাপে পড়ে যায় লঙ্কানরা। কিন্তু এরপর শক্ত হাতে দলের হাল ধরেন পাথুম নিশাঙ্কা আর চারিথ আশালঙ্কা। দুজনে মিলে গড়েন ১৮৫ রানের জুটি। যেটা বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয় অনেকটা।
৩৭তম ওভারে নিশাঙ্কাকে ফেরান মিরাজ। এতেই ভাঙে ১৮৫ রানের জুটি। এর আগে তিনি ১১৩ বল থেকে খেলেন ১১৪ রানের ইনিংস। পরের ওভারেই আশালঙ্কাকে (৯১) ফিরিয়ে ম্যাচের গতি কিছুটা নিজেদের দিকে টেনে নেন তাসকিন আহমেদ। কিন্তু শেষ দিকে হাসারাঙ্গা আর ওয়েল্লেলাগের দায়িত্বশীল ইনিংসে জয় বঞ্চিত হতে হয়েছে বাংলাদেশকে। শ্রীলঙ্কা জয় পেয়েছে ৩ উইকেটে। এতে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ দাঁড়ালে ১-১ সমতায়। সিরিজ জয়ের জন্য বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হবে শেষ ম্যাচ পর্যন্ত।