বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১০:৩০ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
সংবাদ শিরোনাম :
দাঁড়িপাল্লা প্রতীকসহ নিবন্ধন ফিরে পেল জামায়াত কমলগঞ্জে মানবাধিকার সুরক্ষা ও সামাজিকভাবে বঞ্চিত দারিদ্র্য বিমোচন ও বিদ্যমান বৈষম্য লাঘব প্রকল্পের আওতায় প্রকল্প পরিচিতি সভা কমলগঞ্জে স্বাস্থ্য সহকারীদের ৬ দফা দাবিতে দুই ঘন্টা অবস্থান কর্মসূচি মৌলভীবাজারে ৩৬ লক্ষাধিক টাকার ভারতীয় চোরাই পন্য জব্দ, কাভার্ড ভ্যানসহ আটক ৩ সীমান্তে বিএসএফের পুশইন অব্যাহত, রোহিঙ্গাসহ ১৬ জন আটক প্রাপ্ত ঋণের ৬৭ ভাগই গেছে বকেয়া পরিশোধে সাবেক সিইসিকে হেনস্তায় জড়িতদের বিচার চান রিজভী প্রতীক তালিকায় ‘শাপলা’ যুক্ত করছে ইসি! সিরিয়ায় মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে হামলা এবার সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল গ্রেফতার

বাড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ

বাণিজ্য ডেস্ক / ৫০ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশিত : শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
প্রতীকী ছবি।

দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারও ২০ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল। বাংলাদেশ ব্যাংক গত বৃহস্পতিবার রিজার্ভের যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ হিসাবে বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতে বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। আর ‘গ্রস’ হিসাবে ছিল ২৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার।

গত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার। ‘গ্রস’ হিসাবে ছিল ২৫ দশমিক শূন্য পাঁচ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার রিজার্ভসহ অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলোর হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করে। তাতে দেখা যায়, এক মাস আগে ২৪ জানুয়ারি বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক শূন্য ২ বিলিয়ন ডলার। ‘গ্রস’ হিসাবে ছিল ২৫ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলার।

চলতি মাসের প্রথম দিন ১ ফেব্রুয়ারি বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ কমে ১৯ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘গ্রস’ হিসাবে নামে ২৫ দশমিক শূন্য ৯ বিলিয়ন ডলার।

৭ ফেব্রুয়ারি বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার। ‘গ্রস’ হিসাবে ছিল ২৫ দশমিক শূন্য আট বিলিয়ন ডলার। ১৫ ফেব্রুয়ারি বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ছিল একই, ১৯ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার। ‘গ্রস’ হিসাবে ছিল ২৫ দশমিক শূন্য পাঁচ বিলিয়ন ডলার।

সবশেষ বৃহস্পতিবার বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ বেড়ে ২০ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারে উঠেছে। ‘গ্রস’ হিসাবে দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলারে।

আমদানি কমায় এবং রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়ায় রিজার্ভ বাড়তে বাড়তে ২০২১ সালের আগস্টে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ৪৮ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলারে উঠেছিল। কিন্তু এর পর থেকে কমতে কমতে এখন উদ্বেগজনক পর্যায়ে নেমে এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বিপিএম-৬ হিসাবের রিজার্ভকে ‘তাৎক্ষণিক ব্যবহারযোগ্য’ রিজার্ভ হিসাবে দাবি করে।

সবশেষ ডিসেম্বর মাসের আমদানির তথ্য প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই মাসে পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশের ৫ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। সে হিসাবে ‘তাৎক্ষণিক ব্যবহারযোগ্য’ ২০ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ দিয়ে প্রায় চার মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব হবে।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা মজুত থাকতে হয়।

গত বছরের ৭ নভেম্বর আকুর সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মেয়াদের ১ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছিল; কমতে কমতে ১৩ ডিসেম্বর রিজার্ভ ১৯ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে।

এরপর আইএমএফের ৪৭০ কোটি (৪.৭ বিলিয়ন) ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ৬৯ কোটি ডলার, ম্যানিলাভিত্তিক উন্নয়ন সংস্থা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ৪০ কোটি ডলার এবং দক্ষিণ কোরিয়ার ৯ কোটি ডলার যোগ হওয়ায় বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ বেড়ে ২১ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলারে ওঠে। ‘গ্রস’ হিসাবে রিজার্ভ ২৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়।

গত ৮ জানুয়ারি আকুর নভেম্বর-ডিসেম্বর মেয়াদের ১ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ কমে ২০ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। ‘গ্রস’ হিসাবে নেমেছিল ২৫ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলারে।

গত বছরের ১২ জুলাই থেকে আইএমএফের কথামতো রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ‘গ্রস’ হিসাবের পাশাপাশি বিপিএম-৬ পদ্ধতি অনুসরণ করেও রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে। ওই দিন ‘গ্রস’হিসাবে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার। আর বিপিএম-৬ হিসাবে ছিল ২৩ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার।

১২ জুলাইয়ের আগে শুধুমাত্র ‘গ্রস’ হিসাবের রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করত বাংলাদেশ ব্যাংক। এক বছর আগে ৭ ফেব্রুয়ারি ‘গ্রস’ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ৩২ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক বলেন, ‘আশার কথা হচ্ছে, রিজার্ভের দুই প্রধান উৎস রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় দুটোই বাড়ছে। এখন রিজার্ভ আস্তে আস্তে বাড়তে থাকবে।

অর্থনীতির গবেষক পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, প্রায় দুই বছর ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব সব দেশেই পড়েছে। সব দেশেই ডলারের দর বেড়েছে; মূল্যস্ফীতি বেড়েছিল। রিজার্ভ কমেছে। তবে ভালো খবর যে, এই সময় রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স দুটোই বাড়ছে। তা না হলে বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ১৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসত। এই দুই সূচক বাড়ায় আগামী দুই সপ্তাহে রিজার্ভ আরও খানিক বাড়বে বলে মনে হচ্ছে। ‘তাৎক্ষণিক ব্যবহারযোগ্য’ রিজার্ভ ২১ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে উঠতে পারে।

‘তার পর অবশ্য আকুর জানয়ারি-ফেব্রুয়ারি মেয়াদের আকুর বিল পরিশোধ করতে হবে। সেই বিল যদি ১ বিলিয়ন ডলারও হয়, তাও কিন্তু রিজার্ভ ফের ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসবে।’

‘তাৎক্ষণিক ব্যবহারযোগ্য’ রিজার্ভ যাতে কোনো অবস্থাতেই আর ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে না নামে, সেজন্য সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেন আহসান মনসুর।


আরো সংবাদ পড়ুন...
এক ক্লিকে বিভাগের খবর