৫০ বছর পর মায়ের কোলে ফিরলেন নরওয়ে যাওয়া এলিজাবেথ ফিরোজা, সঙ্গে ছিলেন স্বামী হ্যানরি। বৃহস্পতিবার সকালে সাদা রঙের একটি প্রাইভেটকার নিয়ে রাজধানী ঢাকা থেকে মাদারীপুরের শিবচরে আসেন এলিজাবেথ ফিরোজা ও তার স্বামী হ্যানরি। পরে শিবচরের প্রশাসন ও মাদবরচর ইউনিয়নের পোদ্দারচর গ্রামের তারই বংশের একমাত্র ভাতিজা সেলিম সরদারের মাধ্যমে নিজবাড়িতে আসেন তারা। মায়ের সঙ্গে কয়েক ঘণ্টা সময় কাটানোর পর বিকেলেই স্বামীর সঙ্গে রাজধানী ঢাকায় ফিরে যান এলিজাবেথ।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ১৯৭৫ সালের ১৫ জুলাই ঢাকায় ননদের বাসায় শিবচরের মাদবরচর ইউনিয়নের পোদ্দারচর গ্রামের বছির সরদারের স্ত্রী ফিরোজা বেগম কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। নাম রাখেন মৌসুমী। ওই সময় ফিরোজা অভাবের কারণে মৌসুমীকে রাজধানীর মোহাম্মাদপুরের সমাজকল্যাণ পরিচালকের মাধ্যমে নরওয়ের নিঃসন্তান দম্পত্তির কাছে দত্তক দেওয়া হয়।
সম্প্রতি নরওয়ে থেকে শেকড়ের খোঁজে বাংলাদেশে আসেন এলিজাবেথ ফিরোজা। শুরু করেন মাকে খোঁজা। দীর্ঘ চেষ্টার পর দেখা হয় মায়ের সঙ্গে। মায়ের সঙ্গে দেখা করার সময় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রসহ নানা রকমের উপহারসামগ্রী নিয়ে আসেন এলিজাবেথ।
এলিজাবেথের মা ফিরোজা বেগম বলেন, ‘৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালে মৌসুমীর বাবা মারা যান। তখন অসহায় হয়ে পড়লে সরকারের হাতে তুলে দিই মৌসুমীকে। কিন্তু ৫০ বছর পরে মেয়ের দেখা পাব এটা ভাবতেই পারিনি।’
এলিজাবেথ ফিরোজা বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে নরওয়েতে বড় হয়েছি। নরওয়ের বাবা-মা নাম রাখেন এলিজাবেথ। বড় হয়ে জানতে পারি আমার জন্ম বাংলাদেশে। মায়ের নাম ফিরোজা বেগম। তারপর থেকেই আমি ফিরাজো নামটাকে আমার নামের সঙ্গে যুক্ত করি। বিয়ের পর ২২ বছর বয়সে প্রথম সন্তান প্রসবের পর নরওয়ের চিকিৎসক আমার হিস্টরি জানতে চান। তখন থেকেই আমি আমার পরিবারকে খুঁজতে চেষ্টা করি। এ ব্যাপারে আমার স্বামী হ্যানরি ও সন্তানরা আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। সেখানে আমার ৩ ছেলে ও এক মেয়ে এবং নাতি-নাতনিও হয়েছে।’