শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫, ০৫:৪৩ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
সংবাদ শিরোনাম :

আমিরের সুচিকিৎসা নিয়ে জামায়াতকে খোলা চিঠি

অনলাইন ডেস্ক / ৬৭ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫

জামায়াত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের বাইপাস সার্জারি দেশে নয়, বরং বিদেশে করানোর পরামর্শ দিয়ে তার পরিবার ও দলের নেতাকর্মীদের প্রতি খোলা চিঠি দিয়েছেন একজন সাংবাদিক। পেশাগত কারণে ঘনিষ্ঠতার পাশাপাশি জামায়াত আমিরের আত্মীয় এই সাংবাদিক মিজানুর রহমান পরামর্শ দিয়েছেন, ডা. শফিকুর রহমান দেশে চিকিৎসা করাতে চাইলেও প্রয়োজনে সময় নিয়ে তাকে বাইরে পাঠাতে রাজি করাতে হবে। এক্ষেত্রে জামায়াত আমিরের দুই চিকিৎসক মেয়েকে কাজে লাগানোরও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সকালে ফেসবুক পোস্টে দৈনিক মানবজমিনে কর্মরত কূটনীতিক বিটের এই জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক এই পরামর্শ দেন।

সাংবাদিক মিজানুর রহমান লিখেছেন, ডা. শফিকুর রহমানকে যত দ্রুত বিদেশে পাঠিয়ে বাইপাস সার্জারির ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ তার মতো মেধাবী এবং অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদের পরিপূর্ণ সুস্থতা জাতির জন্য এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

খোলা চিঠিতে তিনি বলেছেন, বলা হয় ডাক্তার যখন ‘রোগী’ তখন তার চিকিৎসা নিশ্চিতে হিমশিম খেতে হয় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের। কারণ তিনি নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে আগবাড়িয়ে নানা সিদ্ধান্ত দিয়ে বসেন।

‘নন্দিত রাজনীতিবিদ ডা. শফিকুর রহমান ব্যক্তিগত, সামাজিক, রাজনৈতিক এবং পেশাগতভাবে নানা জনের সঙ্গে নানা কারণে নানাভাবে সম্পৃক্ত। যতটুকু জানি প্রায় ৬৭ বছরের জীবনে তার মেজর কোনো রোগ নেই। ডায়বেটিস, কোলস্টোরলও নেই। কিন্তু আজ যা শুনলাম তা আঁতকে ওঠার মতো। তার হার্টে ৫টা ব্লক, ৩টাই মেজর। কি হবে আল্লাহ মা’লুম।’

জ্যেষ্ঠ এই সাংবাদিক লিখেছেন, শফিক ভাই তাওয়াক্কুল করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার মানুষ। এটা তার বিশ্বাস। কিন্তু আজকের দিনে তিনি সব কিছুর ঊর্ধ্বে, স্রেফ একজন রোগী। তাও হৃদরোগে আক্রান্ত। তিনি আমার প্রতিবেশী, আত্মীয়ও বটে। ব্যক্তিগতভাবে আমাদের জানাশোনা-ঘনিষ্ঠতা প্রায় ২৪ বছরের। তার পরিবার আছে, দলীয়ভাবে বিস্তৃত আলাপ-আলোচনার সুযোগ রয়েছে এখনো।

‘সেই বিবেচনায়, আত্মীয়তার দায় এবং দাবি থেকে লিখছি- একজন সুহৃদ হিসেবে আজকের সমস্ত কিছু মূল্যায়নে আমার পরামর্শ হচ্ছে- উনাকে যত দ্রুত বিদেশে পাঠিয়ে বাইপাস সার্জারির ব্যবস্থা করা। কারণ তার মতো মেধাবী এবং অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদের পরিপূর্ণ সুস্থতা জাতির জন্য এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেমনটা সরকার এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সেদিনের (সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশ-মঞ্চে বক্তৃতাকালে আচমকা উল্টে পড়ে যাওয়ার পরপরই) উপলব্ধি। তাই আবারও বলছি, রোগীর কথায় হয় বরং বাস্তবতা বিবেচনায় অবশ্যই তাকে যত দ্রুত সম্ভব বিদেশে পাঠানো উচিত।’

সাংবাদিক মিজানুর রহমান লিখেছেন, দেশ-মাতৃকার প্রতি কমিটমেন্ট এবং আবেগে ঢাকায় চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে সুহৃদ-শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি অনুরোধ করেছেন তিনি। যদিও তার দল ও পরিবার তাকে সিঙ্গাপুর পাঠাতে মনস্থির করেছে। কিন্তু তার সাফ জবাব- না, আমি বিদেশে যাবো না। দেশেই অপারেশন করাবো। তার ব্যক্তিগত মতামতের প্রতি পূর্ণ সম্মান রেখে বলছি- তাকে রাজি করাতে চিকিৎসক কন্যাদ্বয়কে কাজে লাগান। মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ নিন। দেশের বাইরে কোথায় সর্বোচ্চ ভালো হবে- সেটি দ্রুত অনুসন্ধান করুন। অর্থকড়ির চিন্তা করবেন না। এটি জোগাড়ে তার পরিবার, স্বজন এবং দেশ-বিদেশে থাকা ভক্তকুলের খুব বেশি কষ্ট হবে বলে মনে হয় না।

তিনি আরও লিখেছেন, আমি জানি জামায়াতের নেতারা আমিরের মুখের ওপর ভক্তকুলের করবেন না। কিন্তু এটা মানতে হবে আজকের দিনে আমির অসুস্থ। তার মতামত নেওয়া যেতে পারে কিন্তু সিদ্ধান্ত নয়। সিদ্ধান্ত হবে তাকে বাদ দিয়ে দল এবং পরিবারের সদস্যরা মিলে। আপনারা আবার বসেন প্লিজ, খোলামেলা আলোচনা করুন। নিশ্চয়ই ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটা ভালো সিদ্ধান্ত আসবে।

‘নোট: আমার বিশ্বাস আবেগ নয়, বাস্তববাদী রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াত তার সর্বোচ্চ নেতার সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিত করবে এবং তাকে অবশ্যই বিদেশে পাঠাবে।’

বিদেশে নেওয়ার ক্ষেত্রে ভিসা জটিলতা হবে না জানিয়ে তিনি লিখেছেন, কূটনৈতিক সংবাদদাতা হিসেবে এটা বলতে পারি- সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ভারত, চীন বা আমেরিকা- ডা. শফিকুর রহমানের মতো মানুষের জন্য ইমার্জেন্সি মেডিকেল ভিসা দিতে সেকেন্ড টাইম ভাববে না। ছুটির দিনে মিশন খুলে এমন ব্যক্তিত্বদের ভিসা ইস্যুর নজির ঢাকাতে অহরহ।


আরো সংবাদ পড়ুন...
এক ক্লিকে বিভাগের খবর