মৌলভীবাজার জেলার জুড়ীতে স্থানীয় উন্নয়নমূলক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘গ্রাম উন্নয়ন কার্যক্রম (গ্রাউক)’-এর আয়োজনে বিনামূল্যে চক্ষু শিবির অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (২৭জুলাই) উপজেলার সোনারুপা চা-বাগান হাসপাতালে অভিজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা চা-বাগানের শ্রমিকসহ বিভিন্ন গ্রামের সুবিধাবঞ্চিত ৫ শতাধিক রোগীর মাঝে দিনব্যাপী চক্ষু শিবির ক্যাম্পিংয়ের শুভ উদ্বোধন করেন গ্রাউকের চেয়ারম্যান অশোক রঞ্জন পাল।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জুড়ী উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি প্রবীণ শিক্ষাবিদ আলহাজ্ব তাজুল ইসলাম, শিক্ষক প্রদীপ পাল, শ্রমিক নেতা লিটন গুঞ্জ, ধামাই চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি যাদব রুদ্র পাল, গ্রাম উন্নয়ন কার্যক্রম (গ্রাউক)’-এরব্যবস্থাপকমহাদেব ভূঁইয়া ,সাংবাদিক কল্যাণ প্রসূন চম্পু, সুমন আহমেদ ও সালাহউদ্দিন শুভ প্রমুখ।
দিনব্যাপী চক্ষু শিবিরে রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ঔষধপত্র, চশমা ও পরিবেশ-বান্ধব গাছের চারা বিতরণ করা হয়। এছাড়া প্রায় ৫০ জন ছানি পড়া রোগীর অপারেশনের জন্য বাছাই করা হয়। এ পর্যন্ত গ্রাউকের অধীনে বিভিন্ন ক্যাম্পিংয়ের মাধ্যমে প্রায় দুই হাজার রোগীকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে এবং দেড় শতাধিক দরিদ্র গ্রামীণ রোগীর ক্যাটারাক্ট (এসআইসিএস) অপারেশনসহ লেন্স স্থাপন করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, “গ্রাম উন্নয়ন কার্যক্রম (গ্রাউক)” একটি স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, যা জুড়ী উপজেলা সহ বিভিন্ন উপজেলায় বিনামূল্যে চক্ষু শিবির সহ বিভিন্ন কার্যক্রম করে আসছে। এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সোনারুপা চা-বাগান হাসপাতালে এই শিবিরের আয়োজন করা হয়। এই শিবিরে অভিজ্ঞ চক্ষু বিশেষজ্ঞগণ রোগীদের সেবা দেন। “গ্রাম উন্নয়ন কার্যক্রম (গ্রাউক)” সংক্ষেপে গ্রাউক নামে পরিচিত একটি সংস্থা, যা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে। এটি একটি স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং এর কার্যক্রমের মধ্যে বিনামূল্যে চক্ষু শিবির অন্যতম। এই চক্ষু শিবিরে, অভিজ্ঞ চক্ষু বিশেষজ্ঞগণ রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করেন এবং এলাকার মানুষের চোখের সমস্যা সমাধানে সহায়তা করেন। গ্রাউক এই ধরনের কার্যক্রমের মাধ্যমে গ্রামীণ জনগণের স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।
জুড়ী উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব তাজুল জানান, ‘স্থানীয় উন্নয়নমূলক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘গ্রাম উন্নয়ন কার্যক্রম (গ্রাউক)’-এর আয়োজনে বিনামূল্যে চক্ষু সেবা প্রদান করা হয়েছে। এখানে বেশিরভাগ চা শ্রমিকরা এই সেবাটি নিয়েছেন। এটা দেখে ভালো লাগলো। তার কারণ হলো, চোখে সমস্যা দেখা দিলে অনেক টাকা পয়সার দরকার। কিন্তু চা শ্রমিকরা কই পাবে এতটাকা। তার জন্য সুন্দর একটা ব্যবস্থা করেছে এই প্রতিষ্টান। যার জন্য অনেক মেহনতি মানুষ সেই সেবাটা নিচ্ছে। এটি চা শ্রমিকদের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য বিষয়ক চাহিদা পূরণে সহায়ক হবে বলে আশা করা যায়।’
গ্রাম উন্নয়ন কার্যক্রম (গ্রাউক) এর প্রতিষ্টাতা অশোক রঞ্জন পাল জানান, ‘দিনব্যাপী চক্ষু শিবিরে রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ঔষধপত্র, চশমা ও পরিবেশ-বান্ধব গাছের চারা বিতরণ করা হয়েছে। আমার এমন কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’
জুড়ি উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ চৌধুরী জানান, সামাজিক কার্যক্রমের জন্য ‘গ্রাম উন্নয়ন কার্যক্রম (গ্রাউক)’ খুব ভালো কাজ করছে। তারা জেলার বিভিন্ন স্থানে গরীব মানুষদের ফ্রী সেবা দিচ্ছে। জুড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকার চা বাগানগুলোতে তাদের সামজিক কার্যক্রম অব্যাহত আছে।