গণতন্ত্রের আন্দোলন এখনো শেষ হয়নি, নতুন করে সংগ্রাম শুরু করতে হবে বলে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচিত সরকারের চাইতে শক্তিশালী কোন সরকার হতে পারে না।
আজ সোমবার (৭ জুলাই) শহীদ জিয়াউর রহমানের রুহের মাগফেরাত ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় আয়োজিত দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “চব্বিশের আগে ১৫ বছর আমাদের সিলেটের বহু নেতাকর্মী ভাই গণতন্ত্রের জন্য রাস্তায় রক্ত দিয়েছেন, মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে, হাতে পায়ে বেড়ি দিয়ে বন্দি করে রাখা হয়েছে। চব্বিশে আমার ভাই, আমার ছেলেকে গুলি করে হত্যা করেছে হাসিনা। আমাদের ভোটের অধিকারের জন্য, গণতন্ত্রের অধিকারের জন্য যারা জীবন দিয়েছেন তাদেরকে শ্রদ্ধা জানাতে সিলেট এসেছি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এমনি এমনি হঠাৎ করে হাসিনা পালায়নি, বহুদিনের সংগ্রাম, বহু মানুষের ত্যাগ, বহু মানুষের রক্তের বিনিময়ে আমরা ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছি। ফ্যাসিবাদ মুক্ত হলাম ঠিক আছে, কিন্তু আমরা বলছি লড়াই তো গণতন্ত্রের লড়াই, আমরা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই। যেখানে মানুষ ভোট দিবে, কথা বলার সুযোগ পাবে, তরুণরা কাজের লেখাপড়ার সুযোগ পাবে, নারীরা নিরাপত্তা পাবে, চিকিৎসার সুযোগ পাবে, এইরকম একটি রাষ্ট্র। এজন্য আমরা নতুন করে সংগ্রাম শুরু করেছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা সেই দল যে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন, যিনি দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। শেখ মুজিব একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সব মিডিয়া বন্ধ করেছিলেন চারটি রেখে। সেই অবস্থা থেকে জিয়াউর রহমান মানুষের গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়ে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ করেছিলেন।’
‘আমরা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চাই। তরুণ প্রজন্মের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চাই, বাংলাদেশকে উন্নত দেশ করতে চাই। এজন্য আমরা ৩১ দফা দিয়েছি। এই ৩১ দফা মধ্যে আছে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ, নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন যা আমাদের সামনের দিকে নিয়ে যাবে। তরুণরা সামনের দিকে যেতে চায়, বিএনপিকে সেই নেতৃত্ব দিতে হবে। আসুন সবাই মিলে নতুন বাংলাদেশ গড়ি।’
তবে বিষয়টি সহজ না এবং অনেকে নির্বাচনে বাধা দিতে চায় বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সরকারকে পরিষ্কার করে বলতে চাই, যত নির্বাচনের দেরি হবে, তত বাংলাদেশ পিছিয়ে যাবে। বিনিয়োগ আসবে না, চাকরির সুযোগ তৈরি হবে না, জুডিশিয়াল সিস্টেম ভেঙে পড়বে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়বে।’
‘সেজন্য দরকার একটি নির্বাচিত সরকার। যে সরকারের পিছনে মানুষ আছে, জনসমর্থন আছে। নির্বাচিত সরকারের চাইতে শক্তিশালী কোন সরকার হতে পারে না।’
তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘এখন আপনাদের দায়িত্ব বিএনপিকে যেনো মানুষ ভালোবাসে, এটি তৈরি করতে হবে, এজন্য ত্যাগ স্বীকার করেন। আসুন আমাদের বিরুদ্ধে কেউ যেনো খারাপ কথা বলতে না পারে, জমি দখল করেছি, চাদাবাজি করেছি একথা যেনো কেউ বলতে না পারে।’