ভারতে গিয়ে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজীম আনারের খুন হওয়া নিয়ে শুক্রবার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে নয়াদিল্লিভিত্তিক জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
এতে আনার হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দেয়া হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশি একজন এমপির (যিনি কলকাতায় খুন হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে) চামড়া তুলে ফেলা হয়েছে। একটি ফ্ল্যাটে তার মরদেহ টুকরা হয়েছে। পরে কয়েকটি প্লাস্টিকের প্যাকেটে ভরে শহরজুড়ে মরদেহের অংশগুলো ফেলা হয়েছে।
চিকিৎসার জন্য গত ১২ মে কলকাতায় যান এমপি আনার, যার দুই দিন পর ১৪ মে থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) মুম্বাইয়ের বাসিন্দা অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসী জিহাদ হাওলাদারকে গ্রেপ্তারের পর আনার হত্যার তদন্তে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।
সিআইডির সূত্রের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, কলকাতার নিউ টাউনের ফ্ল্যাটে বাংলাদেশি এমপিকে হত্যা ও তার দেহ টুকরা করার সঙ্গে জড়িত থাকার স্বীকার করেছেন জিহাদ।
এনডিটিভি জানায়, জিহাদকে জিজ্ঞাসাবাদে খুনের নিখুঁত পরিকল্পনা ও সংঘটনের মর্মান্তিক বর্ণনা উঠে আসে।
সিআইডির সূত্র জানায়, বাংলাদেশি আমেরিকান আখতারুজ্জামান এমপি আনার হত্যার হোতা। আখতারুজ্জামানের নির্দেশে কলকাতার নিউ টাউনের ফ্ল্যাটে জিহাদ ও অন্য চার বাংলাদেশি শ্বাসরোধ করে আনারকে হত্যা করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বুধবার এমপি আনার খুনের বিষয়টি জানিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি নিউ টাউনের ফ্ল্যাটটিতে রক্তের দাগ ও বেশ কিছু প্লাস্টিকের ব্যাগ পায়। এসব ব্যাগ দিয়ে আনারের দেহের টুকরাগুলো ফেলা হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশের বিভাগটি।
পুলিশের দাবি, পারিপার্শ্বিক প্রমাণ দেখে মনে হচ্ছে, এমপি আনারকে শুরুতে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় এবং পরবর্তী সময়ে তার দেহ কয়েক টুকরা করা হয়।
পুলিশের কাছে জিহাদের দেয়া বর্ণনার ভিত্তিতে এনডিটিভির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আনারকে হত্যার পর দলটি তার গায়ের চামড়া তোলার পাশাপাশি হাড় থেকে মাংস ছাড়িয়ে ফেলে। আনারের দেহকে ছোট ছোট টুকরা করা হয়, যাতে তাকে চেনার কোনো সম্ভাবনা না থাকে।
হত্যাকারী দলটি এমপির হাড়গুলোকেও ছোট ছোট টুকরা করে এবং দেহের অংশগুলো প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে। পরবর্তী সময়ে সেগুলো গাড়িতে করে কলকাতার বিভিন্ন স্থানে ফেলা হয়।
পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ জানায়, খুনের শিকার হওয়া বাংলাদেশি এমপির দেহের অংশগুলো কোথায় ফেলা হয়েছে, তা নিয়ে আরও তথ্য জানার চেষ্টা চলছে।