নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে অস্থিরতা দিন দিন বেড়েই চলছে। প্রতিদিনই বাড়ছে কিছু না কিছুর দাম। রমজানকে সামনে রেখে এই তালিকায় এবার নতুন করে যোগ হয়েছে পুষ্টিকর ফল কলা। একদিনের ব্যবধানে মৌলভীবাজারে প্রতি হালি কলায় দাম বেড়েছে ১৫থেকে ২০ টাকা। দাম নিয়ন্ত্রণে ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ক্রেতারা।
কলা ব্যবসায়ীরা বলছেন, কিনতে হয় দাম দিয়ে, তাই বিক্রি করার সময় হাতে কিছু টাকা রেখে বিক্রি করতে হচ্ছে।
সোমবার (১১মার্চ) জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে প্রকারভেদে প্রতি হালি সাগর কলার দাম ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। খুচরা বাজারের টং দোকানগুলোতে এক পিস সাগর কলা বিক্রি হচ্ছে ১০-১৫ টাকায়।
খুচরা বাজারে সাগর কলার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সবরি কলার দামও। সবরি কলার হালি বিক্রি হচ্ছে প্রকারভেদে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগেও বিক্রি হয়েছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। বেড়েছে চম্পা কলার দামও। এই জাতের কলা বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা হালিতে। একই দামে বিক্রি হচ্ছে বাংলা কলা। এক সপ্তাহ আগে এই দুই জাতের কলা বিক্রি হয়েছিল ২০ থেকে ২৫ টাকা হালিতে। এদিকে হালিপ্রতি ১০ টাকা বেড়ে কাঁচ কলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়।
ভানুগাছ বাজারে কলা কিনতে আসেন ছাদেক মিয়া। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমি প্রায় সময় লম্বি বা চম্পা কলা কিনি ২০-২৫ টাকা করে। খাবারের পাশে কলা আমাদের লাগে। এখন রমজান মাস আসায় হঠাৎ ১৫-২০ টাকা কলার হালিতে বেড়ে গেলো। কিনতে হলো ৩৫ টাকা করে। এটা কেমন কথা। আগে কিনতাম ৫ হালি এখন কিনলাম ২ হালি। বাধ্য হয়ে দাম দিয়ে কিনতে হল রমজান থাকায়। সেহরীর সময় প্রয়োজন হয়। তিনি বলেন, প্রশাসন যেন এদিকে নজর দেন।’
কমলগঞ্জ উপজেলার ভানুগাছ বাজারের কলার ব্যবসা করছেন মানিক মিয়া। তিনি বলেন, রমজান আসলে কিছুটা কলার দাম থাকে। আমরাও বিভিন্ন এলাকা বা পাইকারি বাজার থেকে দাম দিয়ে আনতে হয়। আমাদের তো কিছু করার নাই। দামে কিনে কিছু টাকা লাভ রেখে বিক্রি করি।
শ্রীমঙ্গলের প্রাইকারী কলা ব্যবসায়ী মইনুল ইসলাম বলেন,‘দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ট্রাকে করে শ্রীমঙ্গলে কলা আসে। এখন পরিবহনসহ অন্যান্য খরচ বেড়েছে। এ কারণে কলার দামও বেড়েছে।’
কমলগঞ্জ পৌর এলাকার টং দোকানদার বাসার মিয়া বলেন, ‘দোকানে ছোট কলা খুব কম চলে। এজন্য বড় কলা আনতে হয়। কিন্তু এখন বড় কলার দাম বেড়ে গেছে। এক পিস কলা ১০ টাকা করে কিনে ১২ টাকায় বিক্রি করছি। এই দামের নিচে বিক্রি করলে আমাদের কোনোভাবে পোষায় না।’
কমলগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন জানান, ‘আমরা সব সময় বাজার মনিটরিং করছি। রমজান মাসকে সামনে রেখে কোনো ভাবে ব্যবসায়ীরা যাতে যে কোনো পন্যগুলো অতিরিক্ত ফায়দা লুটতে না পারে আমাদের প্রশাসন কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, মুল্যের চাইতে অতিরিক্ত দামের কোনো অভিযোগ থাকলে আমরা সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহন করছি।’
মৌলভীবাজার জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে জানান, ‘নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী ন্যায্য দামে প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযান চলমান আছে বলে জানান সহকারী পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম।’