ঘোড়ায় চড়ে বরযাত্রীসহ কনের বাড়িতে গেলেন বর। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে কনে শ্বশুরবাড়িতে গেলেন পালকিতে করে।
গ্রামের বিয়েতে এমন দৃশ্যপট দীর্ঘদিন পর দেখা গেল নাটোর সদরে। উপজেলার হালসা এলাকায় বুধবার দুপুরে ঘোড়ার পিঠে বসা বরকে দেখা যায়।
গতকাল একই এলাকার ফরহাদ আলীর ছেলে সালমান সাফি সৌরভের সঙ্গে দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে মারিয়া খাতুনের বিয়ে হয়।
বর সৌরভ রাজশাহী সিটি কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্র। আর কনে মারিয়া খাতুন নাটোরের নবাব সিরাজউদ্দৌলা সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। আগে থেকে পরিচয় থাকলেও দুই পরিবারের সম্মতিতে তারা বিয়ের পিঁড়িতে বসেন।
উভয়ের পরিবারের বাবা ও মায়ের শখ ছিল তাদের ছেলে-মেয়ের বিয়ের দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখবেন। এর অংশ হিসেবেই বিয়েতে ব্যবহার হয় ঘোড়া ও পালকির।
ঘোড়ায় চড়া বর আর সুসজ্জিত পালকিতে কনেকে দেখতে গ্রামের নানা বয়সী মানুষ ভিড় জমান গ্রামীণ সড়কের দুই পাশে।
বিয়েতে আসা কাউসার হাবিব বলেন, ‘দাদা-দাদিদের মুখ থেকে পালকিতে বিয়ের গল্প শুনেছি। আজ নিজ চোখে পালকিতে কনে আর ঘোড়ায় চড়ে বর বিয়ে করতে যাচ্ছে এমন বিরল দৃশ্য দেখতে পেয়ে এবং সেই বিয়েতে অতিথি হতে পেরে অনেক ভালো লাগছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম জানান, এ বিয়েকে কেন্দ্র করে পুরো গ্রাম আনন্দমুখর হয়ে ওঠে। সবাই আনন্দ-উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
কনের বাবা দোলোয়ার হোসেন বলেন, বিয়েতে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। নানা আয়োজন ও আনন্দ-উল্লাসে সুন্দরভাবে বিয়ে হয়েছে।
মেয়ে ও জামাতার জন্য সবার কাছে দোয়া চান দেলোয়ার।
কনে মারিয়া খাতুন বলেন, ‘এমন আয়োজনে আমি অনেক খুশি। আমার বাবার ইচ্ছে পূরণ হয়েছে।
‘তা ছাড়াও গ্রামীণ বাংলার ঐতিহ্য পালকিতে বিয়ের এই আনুষ্ঠানিকতা জীবনের সেরা স্মৃতি হয়ে থাকবে।’
বর সালমান সাফি সৌরভ বলেন, ‘উভয়ের পরিবারের ইচ্ছাতেই হয়েছে এমন আয়োজন। বিয়ের সকল আনুষ্ঠানিকতা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
‘বিয়ের এমন আয়োজনে দুই পরিবারসহ পুরো গ্রামবাসী আনন্দ পেয়েছেন। তাই আমিও খুশি।’