জমে উঠেছে হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন। নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির স্ত্রীর বিরুদ্ধে লড়ছেন সাধারণ সম্পাদক। জটিল সমীকরণে রয়েছেন এ দুই প্রার্থী। শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে নাকি সমঝোতা! এ নিয়ে চলছে গুঞ্জন।
জানা যায়, নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলমগীর চৌধুরী ঘোড়া এবং জেলা আওয়ামীগ সভাপতি ও বর্তমান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবু জাহিরের স্ত্রী মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলেয়া বেগম আনারস প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচনে মোট চারজন মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। অপর দুই প্রার্থী হচ্ছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের অ্যাডভোকেট মো. নূরুল হক (চশমা) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ফরিদ উদ্দিন তালুকদার (মোটরসাইকেল)।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. মুশফিক হোসেন চৌধুরী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে পদত্যাগ করায় পদটি শূন্য ঘোষণা করা হয়েছিল। আগামী ৯ মার্চ এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
এই নির্বাচন নিয়ে নানা হিসেব-নিকেশ করছেন ভোটাররা। জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও হবিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবু জাহির তার স্ত্রীর নির্বাচনে প্রার্থীতা ঘোষণার পূর্বেই সব উপজেলার ভোটারদের নিয়ে মতবিনিময় করেছেন। অধিকাংশ ভোটাররা আলেয়া বেগমকে সমর্থন দিলে তিনি প্রার্থীতা ঘোষণা করেন। এক্ষেত্রে দলীয় ভোটাররা প্রভাবশালী নেতা আবু জাহিরকে খুশী করতে হলেও তার স্ত্রীকে ভোট দিবেন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
অন্যদিকে অপর প্রার্থী আলমগীর চৌধুরীও আবু জাহিরের সমর্থনপুষ্ট নেতা। তিনি শেষ পর্যন্ত টিকে থাকবেন কিনা তা নিয়েও রয়েছে নানা আলোচনা। তবে ভোটারদের মধ্যে প্রায় ৫০০ জনপ্রতিনিধি রয়েছেন বিএনপি ও বিরোধী মতাদর্শের অনুসারী ও নেতাকর্মী। তাদের ভোটের সমীকরণ কী হবে, সেটি নিয়ে চলছে হিসাব-নিকাশ।
এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলমগীর চৌধুরী বলেন, ৪১ বছর ধরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আছি। জেলার মানুষের কল্যাণে ও উন্নয়নে কাজ করছি। বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছি। জেলার জনপ্রতিধিদের সঙ্গে আমার পরিচয় ও সুসম্পর্ক রয়েছে। বিগত নির্বাচনে আমি প্রার্থী হতে চেয়েছিলাম, কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করিনি। আমি নির্বাচনের জন্য ভোটারদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করছি। আশা করি ভোটাররা আমাকে মূল্যায়ন করে বিজয়ী করবেন।
জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলেয়া বেগম বলেন, আমি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জেলার নারীদের উন্নয়ন ও সমাজের জন্য কাজ করে আসছি। এমপি আবু জাহিরের স্ত্রী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিনা। এলাকার জনপ্রতিনিধিরা আমাকে এ ব্যাপারে উৎসাহিত করে ভোট দেয়ার অঙ্গীকার করেছেন। আশা করি ভোটাররা আমাকে মূল্যায়ন করে সেবা করার সুযোগ দিবেন।
নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, যাচাই-বাছাই শেষে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আগামী ৯ মার্চ সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ইভিএমে ভোট গ্রহণ করা হবে। জেলার ৯ উপজেলা, ৫ পৌরসভা ও ৭৮ ইউনিয়নে মোট ভোটার এক হাজার ১০৪ জন।