তীব্র গরম ও কঠিন আবহাওয়া পেরিয়ে অবশেষে অপেক্ষাকৃত আরামদায়ক সময়ে হজের মৌসুম ফিরে আসছে। সৌদি আরবের জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্র (এনসিএম) জানিয়েছে, ২০২৫ সালের হজ ছিল শেষ গ্রীষ্মকালীন হজ। এরপর টানা ২৫ বছর হজ অনুষ্ঠিত হবে ঠাণ্ডা বা তুলনামূলক আরামদায়ক মৌসুমে।
গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি আরব ২০৫০ সাল পর্যন্ত হিজরি বর্ষপঞ্জিভিত্তিক হজের পূর্ণ সূচি প্রকাশ করেছে। এতে হিজরি ও গ্রেগরিয়ান উভয় ক্যালেন্ডার অনুসারে তারিখ উল্লেখ রয়েছে। হিজরি ক্যালেন্ডার প্রতিবছর গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জির তুলনায় প্রায় ১১ দিন এগিয়ে আসে। ফলে সময়ের ব্যবধানে হজের সময়ও মৌসুম পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়।
সৌদি আবহাওয়া কেন্দ্রের মুখপাত্র হুসেইন আল-কাতানি জানিয়েছেন, ‘আগামী আট বছর হজ পড়বে বসন্তে, তারপর আট বছর শীতে এবং পরবর্তী আট বছর শরতে। ২০৫০ সালে আবার গ্রীষ্মকালীন হজ ফিরে আসবে।’
২০২৬ সাল থেকে শুরু করে ২০৩৩ সাল পর্যন্ত হজ পড়বে বসন্তকালে, অর্থাৎ সাধারণত মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে। এরপর ২০৩৪ থেকে ২০৪১ সাল পর্যন্ত হজ অনুষ্ঠিত হবে শীতকালে—যা ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত বিস্তৃত থাকবে। এরপর ২০৪২ থেকে ২০৪৯ সাল পর্যন্ত হজ হবে শরৎকালে, অর্থাৎ সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের মধ্যে। সবশেষে, ২০৫০ সালে হজ আবার গ্রীষ্মকালে ফিরে আসবে, এবং তা অনুষ্ঠিত হবে আগস্ট মাসে।
এনসিএম এর ভাষ্যমতে, ২০২৫ সালের হজ অনুষ্ঠানের সময় আবহাওয়া ছিল অত্যন্ত গরম। এই গরমকালীন পরিস্থিতি এবারই শেষ হচ্ছে। এরপর থেকে হজযাত্রীরা ঠাণ্ডা ও সহনীয় আবহাওয়ায় হজ পালনের সুযোগ পাবেন, যা বৃদ্ধ, অসুস্থ বা দুর্বল মুসলিমদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী।
হিজরি বর্ষপঞ্জি চাঁদের গতিপথ অনুযায়ী চলে। তাই গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের তুলনায় হিজরি বছর প্রায় ১১ দিন ছোট। এই সময়চক্র অনুযায়ী প্রতি বছর হজ কিছুটা এগিয়ে আসে। এতে ৩০–৩৫ বছরের ব্যবধানে হজ মৌসুম গ্রীষ্ম থেকে শীত হয়ে আবার গ্রীষ্মে ফিরে আসে।
বিশ্বজুড়ে মুসলিমরা প্রতিবছর হজে অংশ নিতে গিয়ে অতিরিক্ত গরম, হিট স্ট্রোক এবং পানিশূন্যতার মতো স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েন। এই পঞ্জিকা অনুযায়ী আগামী ২৫ বছর হজের সময়কাল তীব্র গরমের বাইরে থাকবে, যা বিশ্বব্যাপী হজযাত্রীদের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক খবর।
SUVO/DM