রাত পোহালেই শনিবার।এই ২৩ নভেম্বর খাসিদের বর্য বিদায় উদযাপনের উৎসব। চলতি বছরের অর্থনৈতিক সংকটের কারণ দেখিয়ে বৃহত্তর সিলেটের আদিবাসী ‘খাসি’ (খাসিয়া) সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী উৎসব ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ বর্ষ বিদায় উদযাপন অনুষ্ঠান চলতি বছর ২৩ নভেম্বর না হওয়ার সিদ্বান্ত জানানো হয়েছিল। পুরোনো বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর এ উৎসব অবশেষে হচ্ছে। এতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন খাসিয়া সম্প্রদায়ের লোকজন।
আয়োজক খাসি সোশ্যাল কাউন্সিল জানিয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সহযোগিতায় আয়োজিত অনুষ্ঠানটি হবে। প্রতিবছরের মতো এবারও আয়োজনের রঙে সাজবে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জির মাঠ।
খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফিলা পতমী বলেন, ‘খাসিদের আয়ের প্রধান উৎস পান চাষ। এবার পানের ব্যবসায় মন্দা চলছে। আর্থিক সংকটের কারণে অনুষ্ঠানটি স্থগিত করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। এরপর বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের দৃষ্টি গোচর হয়। এবিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে যোগাযোগ করা হলে উৎসবটি পালনে সর্বাত্মক সহযোগীতার আশ্বাস প্রদান করা হয়।
প্রতিবছর সিলেট বিভাগের প্রায় ৭৩টি খাসিয়া পুঞ্জির মানুষ এ উৎসবে অংশ নেন। এ ছাড়া দেশ-বিদেশের পর্যটকদের আনাগোনাও দেখা যায়। অনুষ্ঠানটি হবে না শুনে খারাপ লেগেছিল বলে জানান খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের সদস্য অনিল জয় ডিখার। তিনি বলেন, এই অনুষ্ঠানে আমাদের খাসি জনগোষ্ঠীর সবাই একত্র হই। সবার সঙ্গে সবার দেখা হয়। অনেক আনন্দ হয় দিনভর। এখন শেষমেশ অনুষ্ঠানটি হবে শুনে বেশ ভালো লাগছে।
সংগঠনের মুখপাত্র সাজু মারছিয়াং বলেন, আর্থিক সংকটের কারণে এ বছর অনুষ্ঠানটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত থাকলেও, শেষ পর্যন্ত প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সর্বাত্মক সহযোগিতা ও স্থানীয় প্রশাসন ও খাসি নেতৃবৃন্দের যৌথ উদ্যোগে উৎসবটি আয়োজনে সম্ভব হচ্ছে। এটি আমাদের ‘খাসি সংস্কৃতি এবং সামাজিক বন্ধনের গুরুত্বপূর্ণ একটি ঐতিহ্যবাহী উৎসব।
বর্য বিদায় উৎসবটি উদযাপনে সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানায় খাসি সম্প্রদায়ের লোকজন। এখন চলছে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি।
এ বিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘খাসিদের বর্ষ বিদায় ও নতুন বছরকে বরণের ঐতিহ্যবাহী উৎসব ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ প্রশাসনের আর্থিক সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হবে।’