লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান থেকে ৩টি মূল্যবান সেগুন গাছ কেটে নিয়ে গেছে স্থানীয় চোর চক্র। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া বন থেকে গত বুধবার গভীর রাতে স্থানীয় একটি সংঘবদ্ধ চোর চক্র ৩টি মূল্যবান সেগুন গাছ কেটে নিয়ে যায়। এদিকে শনিবার দুপুরে কমলগঞ্জ উপজেলার মুন্সিবাজার-শমসেরনগর সড়কের পাশের কেওড়া বন থেকে চুরি হওয়া সেগুন গাছের ১৬ টি খন্ডাংশ উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, লাউয়াছড়া বন বিট অফিসের সংলগ্ন ৩টি কাটা মূল্যবান সেগুন গাছের গুড়া। কাটা গাছ গুলোর গুড়া প্রায় ৪ ফিট গোলাকার ও ৪০/৫০ ফিট উচ্চতার যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় লক্ষাধিক টাকা বলে জানা যায়।
এদিকে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, লাউয়াছড়ার বন প্রহরী ও কমিউনিটি পেট্রোলিং গ্রুপ (সিপিজি) দিনের বেলায় বন পাহারা না দিয়ে লাউয়াছড়ায় গাইডিং সার্ভিস নিয়ে ব্যস্ত থাকেন সেই সুযোগে স্থানীয় চোর চক্র দিনের বেলায় বনের ভিতর ডুকে গাছ দেখে যায় এবং রাতের বেলায় সুযোগ বুঝে গাছ কেটে পাচার করে। অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় সংঘবদ্ধ চোর চক্রের সাথে বন বিভাগের কিছু অসাধু বন প্রহরী ও সিপিজি সদস্য সম্পৃক্ত রয়েছেন।
কমলগঞ্জ জীব বৈচিত্র কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও লাউয়াছড়া ইকো ট্যুরিস্ট গাইড মো. আহাদ মিয়া বলেন, ‘এই বন থেকে প্রায় সময় এভাবে গাছগুলো চুরি হয়। অতিথিও এমন ছিল। এগুলো রক্ষা করার দায়িত্ব বন বিভাগের। কিন্তু বন বিভাগের কিছু অসাধু ব্যক্তিদের সহযোগিতায় গাছ গুলো চুরি হয়ে থাকে। গত বুধবার গভীর রাতে স্থানীয় একটি সংঘবদ্ধ চোর চক্র ৩টি মূল্যবান সেগুন গাছ কেটে নিয়ে যায়। চুরি হওয়া প্রায় ১৬টি অংশ পাওয়া গেছে। যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক জামিল মোহাম্মদ খান বলেন, ‘গাছ কাটার বিষয়টি লাউয়াছড়া বিট কর্মকর্তা জানার পর সংঘবদ্ধ চোর চক্রকে রাতেই ধাওয়া দেওয়া হয়। সেই সময়ে কিছু গাছের খন্ড ও পরিবহন ট্রলি জব্দ করা হয়েছে পাশাপাশি তদন্ত এখনো চলমান রয়েছে। তদন্তে কোন বন প্রহরী অথবা সিপিজির সদস্যের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান। এছাড়া চোর চক্র বন বিভাগের লোকজন আসার আগেই অধিকাংশ গাছের খন্ড নিয়ে যায়। এবিষয়ে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’
এদিকে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, ‘লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান থেকে চুরি হওয়া সেগুন গাছের ১৬ টি খন্ডাংশ কমলগঞ্জ উপজেলার মুন্সিবাজার-শমসেরনগর সড়কের পাশের কেওড়া বন থেকে শনিবার দুপুরে উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের বন বিভাগের কেউ যদি এই কাজে জড়িত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
সম্পাদক ও প্রকাশক : সালাহ্উদ্দিন শুভ , মোবাইল : 01710668127 ইমেইল : protidinermoulvibazar@gmail.com
© ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | প্রতিদিনের মৌলভীবাজার | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।