মজুরির দাবীতে বাগানে বাগানে চলছে প্রতিবাদ মানববন্ধন। বকেয়া মজুরি ও প্রফিডেন্ট ফ্রান্ডের টাকার দাবিতে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে এনটিসি’র মালিকানাধীন কুরমা চা বাগানে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে প্রায় দেড় হাজার চা শ্রমিক। ন্যাশনাল টি কোম্পানির (এনটিসি) মালিকানাধীন কুরমা চা বাগানে ২০ দিন ধরে বেতন-ভাতা, প্রফিডেন্ট ফ্রান্ড, রেশন ও চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে চা শ্রমিকরা। অন্যদিকে একই দাবীতে উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের মদনমোহনপুর, চাম্পারায়, বাঘাছড়া,পদ্মছড়া চা বাগানে চা শ্রমিকদের সাপ্তাহিক মজুরি প্রদান না করায় ১ ঘন্টা কর্মবিরতি পালন করেছে চা শ্রমিকরা।
শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত উপজেলার কুরমা চা বাগান ফ্যাক্টরির প্রদান ফটকের সম্মুখে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন চা শ্রমিকরা।
মাবনবন্ধনে কুরমা চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি নারদ পাসী বলেন, চা বাগানের শ্রমিকদের ২০ দিন ধরে মজুরি বন্ধ রয়েছে। শুধু মজুরী নয় তাদের রেশন ও চিকিৎসা সেবাও বন্ধ রয়েছে, হাসপাতাল গুলোতে ঔষধ নেই। এছাড়াও ১৫ মাস ধরে আমাদের প্রফিডেন্ট ফ্রান্ডের টাকা দিচ্ছেনা। কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সবকিছু লুটেপুটে খেয়েছে। কত কষ্ট করে প্রতিদিন শ্রমিকরা কাজ করে যাচ্ছে, কিন্তু মজুরি বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এতে করে তারা মানবেতর জীবন-যাপন করছে। অনেক দোকানীরা বাকি দিতে চাইছে না। দ্রুত বকেয়া মজুরি প্রদান না করা হলে আগামী সোমবার থেকে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
মাবনবন্ধনে চা শ্রমিক মুক্তার রানী বাউরী বলেন, ‘মজুরি বন্ধ দুই সপ্তাহের উপরে। পরিবারের লোকজন নিয়ে না খেয়ে থাকতে হচ্ছে। এখন আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে।’
আরেক শ্রমিক সাথী বিলাস বলেন, ‘মজুরি বন্ধ থাকায় বাগানের কোনো দোকানপাট থেকে বাকিতেও কোনো কিছুই ক্রয় করতে পারছি না। এভাবে মজুরি বন্ধ থাকলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে।’
মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল হক, পঞ্চায়েত সদস্য নওশাদ আহমেদ, বালক দাস পাইনকা, চা শ্রমিক সন্ধ্যা বুনার্জী, প্রদীপ রজক, যোগেষ রজত,দিলীপ পাইনকা, চা নেত্রী গীতা রানী কানু প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, চা বাগানের শ্রমিকদের দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে মজুরি বন্ধ রয়েছে। কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সবকিছু লুটেপুটে খেয়েছে। কত কষ্ট করে প্রতিদিন শ্রমিকরা কাজ করে যাচ্ছে, কিন্তু মজুরি বন্ধ করে রাখা হয়েছে। আগামী সোমবারের মধ্যে আমাদের বকেয়া মজুরি প্রদান না করা হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে হুশিয়ারি দেন চা শ্রমিকরা।
কুরমা চা বাগানের ম্যানেজার ইউসুফ খাঁন বলেন, ‘জুলাই ও আগস্ট মাসে দেশে বিভিন্ন ধরনের আন্দোলন ছিল এবং সম্প্রতি দেশে বন্যায় কমলগঞ্জের গাড়ি যাতায়াতের প্রদান সড়কগুলো বন্ধ হয়ে যায়। যার কারণে চা পাতাগুলো সরবরাহ ও বিক্রয় করতে বেঘাত ঘটে। কিছুদিনের ভিতরে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে এবং শ্রমিকদের পাওনা দ্রুত সময়ের মধ্যে দেওয়া হবে। এছাড়াও তিনি বলেন, চিকিৎসা ও রেশনের কোনো সমস্যা নাই। শ্রমিকরা বাকি সবগুলো পাচ্ছে।’
সম্পাদক ও প্রকাশক : সালাহ্উদ্দিন শুভ , মোবাইল : 01710668127 ইমেইল : protidinermoulvibazar@gmail.com
© ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | প্রতিদিনের মৌলভীবাজার | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।