বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে রাজধানী ঢাকায় গত রাত থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে। টানা বৃষ্টিতে নগরবাসীর ভোগান্তির সীমা নেই। কিন্তু সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া দিনমজুর, রিকশাচালক, হকার, নির্মাণশ্রমিকসহ নিম্নআয়ের মানুষরা। এদের জীবনযাত্রা প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। জীবিকার জন্য প্রতিদিন পথে নামতে হয় তাদের। কিন্তু টানা বৃষ্টির কারণে সেই পথ এখন কাদায় ভরা দুর্ভোগের রাস্তায় পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে বৃষ্টিতে মানুষ খুব একটা বের না হওয়ায় আয় নেই রিকশাচালকদের।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাজধানীর পল্টন, কারওয়ান বাজার, মগবাজার বাড্ডাসহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, সকাল থেকেই বৃষ্টির কারণে অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে রিকশা চালানো যেমন কঠিন হয়ে পড়েছে, তেমনি যাত্রীও অনেক কম।
পল্টনে রিকশা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা শরিফুল বলেন, ‘সকাল থেইকা রিকশা নিয়া বের হইছি। বৃষ্টির মধ্যে যাত্রীই নাই। কয়েকটা ট্রিপ দিছি, ২০০ টাকার মতো কামাই হইছে। খাওন আছে আবার গ্যারেজ ভাড়া আছে।’
শুধু রিকশাচালক বা শ্রমিক নয়, ভোগান্তিতে পড়েছেন পথচারী, হকার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও। ফুটপাতে বসে যারা ব্যবসা করেন, তাদের পণ্য ভিজে যাচ্ছে। অনেকেই দিনের বেশিরভাগ সময় দোকান না খুলেই ফিরে যাচ্ছেন।
মধ্য বাড্ডায় ফুটপাতে প্লাস্টিকের পণ্য বিক্রি করা মনির বলেন, ‘পলিথিন দিয়া ঢাকলেও সব ভিজে যায়। ক্রেতা আসে না, বসে থেকে লাভ হয় না। দিনে ১৫০০ টাকার বিক্রি করতাম, এখন ৩০০ টাকাও হয় না।’
এদিকে, গণপরিবহন সংকটের কারণে নাগরিকদেরও অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। অফিসগামী লোকজন সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন না। সকাল-সন্ধ্যা ঢাকার প্রধান সড়কগুলোতে তীব্র যানজটও দেখা যাচ্ছে, যা জনদুর্ভোগকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
অন্যদিকে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্ট সুস্পষ্ট লঘুচাপটি নিম্নচাপে রূপ নিয়ে উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে সাগরদ্বীপ ও খেপুপাড়ার নিকট দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে। এর প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় চার ফুট পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা রয়েছে। ইতোমধ্যে প্লাবিত হয়েছে অনেক উপকূলীয় জেলা।
আবহাওয়া অফিসের সর্বশেষ দেওয়া ঘূর্ণিঝড়ের জন্য বিশেষ পূর্বাভাসে জানানো হয়, নিম্নচাপটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে সাগরদ্বীপ ও খেপুপাড়ার নিকট দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে আজ সন্ধ্যা নাগাদ উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে এবং ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের ওপর দিয়ে দমকা/ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : সালাহ্উদ্দিন শুভ ,মোবাইল : 01710668127 ইমেইল : protidinermoulvibazar@gmail.com
© ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | প্রতিদিনের মৌলভীবাজার | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।