পবিত্র ঈদুল ফিতরে ঘরমুখো যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে রাজধানী ঢাকায় প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ স্বাভাবিক রাখতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে। এ জন্য পার্শ্ববর্তী সব ইউনিটের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার মো. মুনিবুর রহমান।
অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘ঢাকার টার্মিনাল থেকে বাসগুলো ছেড়ে সারা দেশে চলে যাচ্ছে। শুধু সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকেই দেশের ৩৮টি জেলার বাস যায়। মাওয়া হাইওয়ে, সিলেট ও চট্টগ্রাম হাইওয়েতে বাসগুলো ওঠে। কিন্তু টার্মিনালের পরের রাস্তাগুলো সুবিধার নয়। রাস্তার সংস্কার কাজ চলছে, দ্রুততম সময়ে সংস্কার হয়ে গেলে আমাদের জন্য সুবিধা হয়।’
ট্রাফিক পুলিশের ঊর্ধ্বতন এই কর্মকর্তা বলেন, এবারের ঈদ উপলক্ষে অন্তত এক থেকে সোয়া কোটি মানুষ ঢাকা ছাড়বে। বাসের ট্রিপগুলো ঠিক সময়ে দিতে পারলে শিডিউল বিপর্যয় এড়ানো যায়। শিডিউল বিপর্যয় হলেই রাস্তায় অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে থাকে। তখনই সমস্যার সৃষ্টি হয়।
তিনি বলেন, ‘গার্মেন্টস শ্রমিকদের শেষ মুহূর্তে একসঙ্গে ছুটি হয়। লাখ লাখ মানুষ একসঙ্গে বাড়িতে রওনা হয়। তখন কিছুটা ভোগান্তি দেখা যায়। আশা করি অন্যান্য বছরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এবার ভালো সেবা দিতে পারব।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে ডিএমপির অভিযান একটি চলমান প্রক্রিয়া। ট্রাফিক বিভাগ নিয়মিত গাড়ির কাগজ যাচাই করে ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। অনেক ভালো গাড়ির ফিটনেস থাকে না আবার দেখতে ভাঙাচোরা মনে হলেও দেখা যাচ্ছে সেই গাড়ির ফিটনেস থাকে। ফিটনেস সার্টিফিকেট থাকা সত্ত্বেও কোনো গাড়ি রাস্তায় নষ্ট হলে অনাকাঙ্ক্ষিত ভোগান্তি তৈরি করবে। এদিকে, শ্রমিকরা একযোগে যখন যাত্রা শুরু করে তখন অযাচিত কিছু যানবাহন ঢুকে পড়ে। আমাদের চোখে পড়লে ব্যবস্থা নিই। আমরা সচেতন আছি, ক্রাইম ডিভিশনকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করছি। যাতে ফিটনেসবিহীন গাড়ি বের হতে না পারে সে জন্য আমরা গ্যারেজগুলোতে বিশেষ নজরদারি করছি।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মুনিবুর রহমান বলেন, ‘ট্রাফিক বিষয়টা একটা সিস্টেমের ওপর ডিপেন্ড করে। ঈদে যখন আমাদের এলাকা থেকে বাসগুলো বের হয়ে যায় তখন বেশি দেরি হয় না। পরে কিছু কিছু সড়কে জটিলতা দেখা যায়। কিন্তু বর্তমানে হাইওয়ে পুলিশ অনেক ডেভেলপ হয়েছে। হাইওয়ে পুলিশের যদি সমন্বয়টা ভালো করতে পারে, এন্ট্রি-এক্সিটে সমস্যা না হলে এবার খুব একটা সমস্যা হওয়ার কথা না।’
ডিএমপির প্রধান ট্রাফিক কর্মকর্তা বলেন, ‘ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে আমাদের সবসময় পদক্ষেপ থাকে। রেকার, ডাম্পিং গ্রাউন্ড, জনবল রয়েছে। অনেক সময় ফিটনেস ভালো থাকলেও অযাচিত যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। এমন আশঙ্কা থেকে বিভিন্ন পয়েন্টে আমাদের ব্যবস্থা থাকে। এন্ট্রি-এক্সিট পয়েন্টে যাতে কোনো সমস্যা না হয় সে জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে।’
ট্রাফিকপ্রধান বলেন, টার্মিনালের ভেতর থেকে বাসে যাত্রী ওঠানামার কাজ করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই টার্মিনাল থেকে বের হয়ে রাস্তা থেকে বাসে যাত্রী উঠা-নামানোর কাজ করা যাবে না। গণপরিবহনগুলো নির্ধারিত সংখ্যার অতিরিক্ত যাত্রী বহন করবে না। বিশেষ করে ছাদে কোনো যাত্রী ঝুঁকি নিয়ে যাবে না। দূরপাল্লার গণপরিবহনগুলো মহানগরীর মধ্যে যাত্রী ওঠানামার কাজ করবে না। এ ক্ষেত্রে গেটলক পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। মোটরসাইকেলে যারা দূরপাল্লার যাত্রী থাকবেন তাদের অবশ্যই যাত্রাকালীন সময়ে হেলমেট পরতে হবে। ঝুঁকি পরিহার করার জন্য মোটরসাইকেল যাত্রীদের অতিরিক্ত মালামাল বহন না করা জন্য আহ্বান জানানো যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, যেসব যানবাহনে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহৃত হচ্ছে, গ্যাস সিলিন্ডারটি যেন মেয়াদোত্তীর্ণ/ঝুঁকিপূর্ণ না থাকে সে বিষয়টি যাত্রাপথের আগে নিশ্চিত করতে হবে। লঞ্চ টার্মিনাল, রেলওয়ে স্টেশন, বিমানবন্দরকেন্দ্রিক যাত্রীদের গমনাগমন সুষ্ঠু করার জন্য ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ সচেষ্ট থাকবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : সালাহ্উদ্দিন শুভ ,মোবাইল : 01710668127 ইমেইল : protidinermoulvibazar@gmail.com
© ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | প্রতিদিনের মৌলভীবাজার | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।