আগামী মে মাস থেকে সারাদেশে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শুরু হবে। ইতিমধ্যে প্রথম পর্যায়ের নির্বাচনের তপশিলও ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তপশিল এখনও ঘোষণা করা না হলেও জুম্মার ও তারাবির নামাজে উপস্থিত হয়ে ও বিভিন্ন ইফতার পার্টিতে অংশ নিয়ে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ার কথা বলছেন প্রার্থীরা। তাছাড়া বিভিন্ন ইউনিয়নে সমাজিক ও পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হয়ে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে নির্বাচিত হয়েছিলেন অধ্যাপক মো রফিকুর রহমান। সে বছর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে প্রতিন্ধীতা করছেন কমলগঞ্জ উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুল। এ নিয়ে সে সময় বেশ উত্তেজনাসহ দলীয় বড় বিরোধ সৃষ্টি হয়। এবারের উপজেলা পরিষদ দলীয় মনোনয় না থাকায় উন্মুক্তভাবে প্রার্থীতা চাওয়া হয়। ফলে এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন কমলগঞ্জে আরও উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে।
সরজমিন, কমলগঞ্জ উপজেলার ৯ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকা ঘুরে দেখা যায় বর্তমান কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো.অধ্যাপক মো রফিকুর রহমান তাঁর তৃনমুল পর্যায়ের কিছু নেতা কর্মী নিয়ে নির্বাচনের প্রচারনা করছেন। এক এক শুক্রবার এক এক এলাকার মসজিদে উপস্থিত হয়ে সাধারণ মুসল্লীর সাথে নামাজ আদায় করে আসন্ন নির্বাচনে ভোট দিয়ে আবারও চতুর্থবারের মত নির্বাচিত করার আহ্বান জানান। অধ্যাপক মো রফিকুর রহমানকে আবার বিভিন্ন সংগঠনের ইফতার পার্টিতে অংশ নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতেও দেখা যায়।
অন্যদিকে, গত নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী কৃষি মন্ত্রী উপাধ্যক্ষ ড. এম এ শহীদের ছোট ভাই কমলগঞ্জ উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুলকে এক এক শুক্রবার এক এক এলাকার মসজিদে উপস্থিত হয়ে জুম্মার নামাজ আদায় করতে দেখা যায়। নামাজের আগে তিনি উপস্থিত মুসল্লীদের কাছে ভোট প্রার্থনা করেছেন। প্রতিদিন কোন না কোন এলাকায় ইফতার পার্টি, খেলাধুলা, ও চায়ের দোকনে অংশ নিয়ে নির্বাচন সম্পর্কে বক্তব্য রাখছেন। প্রতিদিন গড়ে ৮ থেকে ২০ টি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হবেন উল্লেখ্য করে তাকে নির্বাচিত করার আহ্বান জানান। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় কমলগঞ্জ পৌরসভা ও ৯ টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, সদস্য ও সাধারণ জনগনসহ একটি শক্তিশালী কর্মী তাঁর হয়ে প্রচারণায় কাজ করছেন।
এমনিভাবে কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) আলমগীর হোসেন ও সাবেক ভাইরাস চেয়ারম্যান মো. সিদ্দেক আলী, এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান বিলকিস বেগম ও আওয়ামী লীগ নেত্রী মুন্না রায় নির্বাচনের প্রচারনা চালাচ্ছেন।
কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুল বলেন, ‘তিনি কোন জনপ্রতিনিধি না হয়েও বিগত কমপক্ষে দেড় দশক ধরে কমলগঞ্জবাসীর সেবা করছেন। এখন সুযোগ এসেছে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে আরও বেশি জনসেবা করতে পারবেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, সকল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য, কমলগঞ্জ পৌরসভা মেয়র ও কাউন্সিলর তার হয়ে প্রচারনায় ব্যস্ত তাই ইনশাআল্লাহ তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন। এছাড়াও তিনি বলেন, মানুষের দাবী আপনি যখন কাজ করেন এ উপজেলার জন্য সবসময়। তাই আগামী নির্বাচনে আপনাকে চাই। গত নির্বাচনে আমি প্রার্থী ছিলাম, আল্লাহর হুকুম হয়নি, সে সময় আমি জয়লাভ করতে পারিনি। এবার শতভাগ নিশ্চিত আমি মানুষের ভালোবাসায় বিপুল ভোটে নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারবো।’
কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. রফিকুর রহমান বলেন, ‘আমি আবারও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধীতা করবো। জয়ের ব্যপারে আমি আশাবাধি এলাকায় প্রচুর উন্নয়ন মূলক কার্যক্রম করেছি সেই সুবাধে জনগন আমায় আবারও পূন নিবাচিত করবে। তিনি আরও বলেন, কিছু সুবিধাভোগী নেতাকর্মীরা আমার বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে,তারা কখনো সফল হবে না।’
এদিকে নির্বাচনের বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে কমলগঞ্জ পৌর মেয়র মো. জুয়েল আহমেদ বলেন, ‘মানুষ উন্নয়ন চায়। তাই একজন পরিচন্ন সমাজকর্মী। যিনি দীর্ঘদিন যাবত নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন এই উপজেলার জন্য। সেজন্য কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুল ভাইয়ের বিকল্প নাই। তিনি বলেন, যে ব্যক্তির বড় কোন রাজনৈতিক পদ না থাকা সত্যেও তৃনমূল মানুষের পাশে ছিলেন সেই মানুষকে সাধারন জনগন চায়। আমরা শতভাগ আশাবাদি এবারের উপজেলা নির্বাচনে ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুল ভাই নির্বাচিত হবেন।’
সম্পাদক ও প্রকাশক : সালাহ্উদ্দিন শুভ ,মোবাইল : 01710668127 ইমেইল : protidinermoulvibazar@gmail.com
© ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | প্রতিদিনের মৌলভীবাজার | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।