গলফ পাগল দেশটার ছোট্ট সেই ছেলেটি ছিলেন ফুটবল পাগল। স্কুলের দিনগুলোতে গোলবারের নিচে দাঁড়িয়ে হয়েছেন দলের ভরসার পাত্র। তবে ফুটবল নয় ক্রিকেটেই ক্যারিয়ার গড়েন তিনি। বলছি নিউজিল্যান্ডের অলরাউন্ডার জ্যাকব ওরামের কথা। ডান হাতি পেসার আর বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান ছিলেন তিনি। এমনকি ফিল্ডিংয়ে বেশ দুর্দান্ত ছিলেন তিনি।

৪ জানুয়ারি, ২০০১। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়েলিংটনে ওয়ানডেতে অভিষেক হয় ওরামের। লোয়ার-মিডল অর্ডারে ব্যাট করলেও শুরুর দিকে তার নির্দিষ্ট কোনো ব্যাটিং পজিশন ছিল না। ওরাম ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে কার্যকরী ছিলেন না ব্যাট হাতে। তবে দুর্দান্ত ছিলেন বল হাতে। নিউজিল্যান্ডের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন ওরাম। তিনি বরাবরই আগ্রাসী ব্যাটিং দিয়ে সবাইকে মুগ্ধ করেছেন। পাওয়ার হিটিং অ্যাবিলিটির কারণে তার বেশ নামডাক ছিল।

মূলত, উচ্চতার কারণে সব সময়ই বোলিংয়ে অতিরিক্ত সুবিধা পেতেন তিনি। উচ্চতাকে কাজে লাগিয়ে এক্সট্রা বাউন্স জেনারেট করতে পারতেন ওরাম। অভিষেকের পর নিজের ষষ্ঠ ম্যাচেই মেইডেন হাফ সেঞ্চুরির দেখা পান ওরাম। ক্রাইসচার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডেতে ৫৭ বলে ৫৯ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন তিনি।

ওরাম ক্যারিয়ারে ১৬০ ওয়ানডে ম্যাচে ২৪.০৯ গড়ে করেন ২৪৩৪ রান। ৮৬.৬১ স্ট্রাইক রেটে ওয়ানডে খেলেছেন তিনি। এক সেঞ্চুরির পাশাপাশি করেছেন ১৩টি হাফ সেঞ্চুরি। ২৯.১৭ গড়ে ঝুলিতে ভরেছেন ১৭৩ উইকেট।

৩৩ টেস্টে ৩৬.৩২ গড়ে করেছেন ১৭৮০ রান। পাঁচ সেঞ্চুরির সঙ্গে করেছেন ছয়টি হাফ সেঞ্চুরি। ৩৩.০৫ গড়ে ৬০ উইকেট শিকার করেন সাদা পোশাকে। ৩৬ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে প্রায় ২১ গড় আর ১৪০ স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন ৪৭৪। আছে দুটি ফিফটি।

৩৪ বছর বয়সেই ওরাম বুঝতে পেরেছিলেন তার ক্যারিয়ার প্রায় শেষ। ১২ বছরের ক্যারিয়ারে একা হাতে তার অনবদ্য অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে দলকে বহু ম্যাচ জিতিয়েছেন। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের স্বর্ণযুগ বলা হতো যে সময়টাকে, সে সময়ে দলে ছিলেন ওরাম। ইনজুরিতে ক্যারিয়ারে সাফল্যের শীর্ষে না যেতে পারলেও তিনি ছিলেন একজন ধারাবাহিক পারফরমার। তিনি বরাবরই দলের পক্ষে কার্যকরী ভূমিকা পালন করেছেন। তার আগ্রাসী ব্যাটিং আর দুর্দান্ত ফিল্ডিং ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে সব সময়ই থাকবে। যদিও হ্যাডলির রেখে যাওয়া জায়গাটা নিতে পারেননি তিনি।

পুরো নাম: জ্যাকব ডেভিড ফিলিপ ওরাম।
জন্ম: ২৮ জুলাই, ১৯৭৮ সাল।
জন্মস্থান: পালমারস্টোন নর্থ, মানাওয়াতু, নিউজিল্যান্ড।
রাশি: সিংহ রাশি।
প্রিয় খেলা: ক্রিকেট।
প্রিয় খাবার: সামুদ্রিক মাছ।
প্রিয় পানীয়: বিয়ার।
প্রিয় রং: সাদা ও লাল।
প্রিয় ক্রিকেটার: মার্টিন ক্রো।
প্রিয় ক্রিকেট দল: নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দল।
প্রিয় সতীর্থ: ব্রেন্ডন ম্যাককালাম।
প্রিয় গাড়ি: অডি।
প্রিয় স্টেডিয়াম: ম্যাকলিন পার্ক, নিউজিল্যান্ড।
প্রিয় শখ: ভ্রমণ ও ফুটবল খেলা।
প্রিয় জুতার ব্র‌্যান্ড: সিএ স্পোর্টস।