রোজা শুরুর আগেই বেড়ে গিয়েছিল নিত্যপণ্যের দাম। বাজার ও পণ্যভেদে দাম বেড়েছে ৫ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। তবে রমজানের প্রথম দিন আরেক ধাপে বাড়ল ইফতারসামগ্রীর দাম। বিশেষ করে দাম বেড়েছে লেবু, ইসবগুলের ভুসি, শসার।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর মালিবাগ বাজার, হাতিরপুল বাজার, কারওয়ান বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা পর্যায়ে বেড়েছে দেশি-বিদেশি সব ধরনের নিত্যপণ্যসহ ইফতারসামগ্রীর দাম। এতে ব্যয় সামলাতে দিশেহারা মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তরা। ইফতারের প্লেটে এসব সামগ্রী কতটা উঠবে, তা নিয়ে তাদের চোখে-মুখে সংশয় দেখা দিয়েছে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, রোজার মাসে সব পেশাজীবী বাড়তি আয়ের চেষ্টায় থাকে এবং নিজের বাড়তি ব্যয়ের বোঝা অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়। ফলে জিনিসপত্রের দাম বাড়ে। তবে সংযমের মাসে যে যার অবস্থান থেকে সংযমী হলে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রবণতা কমে আসবে।
ইফতারের গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ বড় সাইজের লেবু বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা দামে। অথচ এর আগের দিন সোমবার একই সাইজের লেবু বিক্রি হয়েছিল ৬০ টাকা দামে। গতকালের কেজিপ্রতি ৮০ টাকা মূল্যে বিক্রি করা শসার দাম এখন ১০০ থেকে ১২০ টাকা। ইসবগুলের ভুসি ১০০ গ্রাম বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২২০ টাকা দামে। আগের দিন একই পরিমাণ ভুসি বিক্রি হয়েছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়।
রাজধানীর হাতিরপুল বাজারে কথা হয় কাঁঠালবাগান এলাকার বাসিন্দা খাদিজা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সবকিছুর ডাবল ডাবল দাম। ১০০ গ্রাম ভুসি কিনেছি ২২০ টাকায়। গত রমজানে কিনেছিলাম ১১০ টাকায়।’
৫ থেকে ১০ টাকা পার্থক্য থাকলেও রাজধানীর বেশির ভাগ বাজারে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে ইফতারসামগ্রী। মালিবাগ কাঁচাবাজারের বরিশাল সবজি বিতানের বিক্রেতা মোস্তফা কামাল বলেন, শসা, বেগুন আর লেবুর দাম বাড়তি। অন্য কাঁচামালেও দাম সামান্য ওঠানামা করছে।
কারওয়ান বাজারের খুচরা বিক্রেতা আব্দুল মান্নান। প্রতি কেজি শসা ১২০ টাকায় ও ছোট সাইজের লেবুর হালি ৮০ টাকায় বিক্রি করছেন তিনি। মান্নান বলেন, রমজানের শুরুতে দাম উল্টাপাল্টা। কয়েক দিন পরে কমে আসবে।
তার দাবি, কিনতে হয়েছে বেশি দামে। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে তাকে।
এদিকে বাজারে মাছ-মাংসের দামও চড়া। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২৩০ টাকায়। অথচ ১০ দিন আগেও ২০০ টাকা দামে বিক্রি হয়েছিল। অন্যদিকে দেশি মুরগি ৬৮০ টাকা দামে বেচতে দেখা গেছে, যা ১০ দিন আগে ছিল ৬০০-৬৫০ টাকা। গরুর মাংস কোনো বাজারে ৭৫০ টাকা, আবার কোথাও ৮০০ টাকা দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। কিছুদিন আগেও গরুর মাংসের দাম ছিল ৭০০ টাকা কেজি। রোজা আসায় খাসির মাংসের দাম ১০০-১৫০ টাকা বেড়ে, কেজি ১১৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
মালিবাগ কাঁচাবাজারের দেশি মুরগি বিক্রেতা মোমেন বলেন, চাহিদা অনুপাতে বাজারে মুরগির জোগান কম থাকায় দাম বাড়তি।
হাতিরপুলের ১১১ নম্বর মোবারক হোসেনের দোকানের মাংস বিক্রেতা বশির বলেন, ‘রমজানে মাংসের বিক্রি বাড়ায় দামও বেড়ে গিয়েছিল। সোমবার ৮০০ টাকা দামে গরুর মাংস বিক্রি করেছি। আজকে আবার ৭৫০ টাকা দামেই বিক্রি করছি।’
সম্পাদক ও প্রকাশক : সালাহ্উদ্দিন শুভ ,মোবাইল : 01710668127 ইমেইল : protidinermoulvibazar@gmail.com
© ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | প্রতিদিনের মৌলভীবাজার | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।